যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মিত্রদের কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে তদন্ত চলছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, টিউলিপের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে সরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, টিউলিপের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কয়েকজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ তালিকায় অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভসের সহযোগী অ্যালিস্টেয়ার স্ট্র্যাথার্ন, ইমোজেন ওয়াকারসহ আরও কয়েকজনের নাম রয়েছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপের প্রতি তার আস্থার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্রও বিকল্প প্রার্থীদের তালিকা তৈরির দাবি সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক নিজেও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লউরি ম্যাগনাসকে লেখা এক চিঠিতে তিনি অভিযোগ তদন্তের জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, “আমি কোনো ভুল করিনি, তবে সন্দেহ দূর করতে চাই। তাই স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করা প্রয়োজন।”
দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, তিনি লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় সাত লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন। একইভাবে, তার বোন আজমিনা সাড়ে ছয় লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। এসব সম্পত্তি নিয়ে উঠা প্রশ্ন টিউলিপকে এখন চাপের মুখে ফেলেছে।
অন্যদিকে, টিউলিপের একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, এই ফ্ল্যাট উপহার বা অন্য কোনো সম্পত্তি অর্জনের ঘটনায় টিউলিপ কোনো অনিয়ম করেননি। তার দাবি, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের বেশিরভাগই ভুল উল্লেখ করে টিউলিপ বলেন, “আমি কোনো অন্যায় করিনি। কিন্তু যে কোনো ধরনের সন্দেহ দূর করার জন্য আমি চাই, স্বাধীন তদন্ত করা হোক।”
এদিকে, বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)ও টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করছে।
এ অবস্থায় টিউলিপের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চলছে, যদিও তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :