সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে খাসিয়ামারা নদীর বামতীরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পাউবো’র তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রকল্পে প্রথমে বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে স্থানীয় কৃষকদের তীব্র আপত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু পরবর্তীতে সেই বালুর ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।
বক্তারপুর গ্রামের কৃষক জুয়েল মিয়া জানান, “বাঁধের ভাঙা অংশ সম্পূর্ণ বালি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পাউবোর ইঞ্জিনিয়ার বালি সরানোর নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি। বরং বালির ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয় কৃষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, বাঁধ নির্মাণে গাফিলতি এবং নীতিমালা উপেক্ষার কারণে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে ফসলের ক্ষতি হতে পারে।
পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) সাদ্দাম হোসেন জানান, “বালুর বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইউএনও মহোদয় কাজের তদারকি করছেন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু বলেন, “বালির বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করার পরও যদি মাটির প্রলেপ দিয়ে কাজ চালানো হয়, তাহলে পিআইসি বাতিল করা হবে।”
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১৪ নম্বর পিআইসি প্রকল্পে খাসিয়ামারা নদীর ৫৮ মিটার ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণে ৮ লাখ ২২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
সরজমিন দেখা গেছে, ধুলোমিশ্রিত বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণের পর এলাকাবাসীর অভিযোগে কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়। পরে বালুর ওপর মাটি চাপিয়ে কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে আরও ক্ষোভ তৈরি করেছে।
কৃষকদের অভিযোগ, ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পিআইসির অন্তরালে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কাজটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
পিআইসি সদস্য মোস্তফা মিয়া অবশ্য দাবি করেছেন, “বালি সরিয়ে মাটি ফেলা হচ্ছে।” তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজের মান বজায় রাখতে কোনো তদারকি নেই।
স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :