বিশ্ব মানবতার কল্যাণে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন ছিল এক মাইলফলক, যা মানব সমাজে শান্তি, ন্যায় ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দেয়। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে যখন পৃথিবী ছিল অন্যায় ও অরাজকতার শিকার, বিশেষ করে নারীর অধিকার ছিল প্রায় শূন্য, তখন মহানবী (সা.) তার অনুসারীদের কাছে নারীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন। ইসলামের এই নির্দেশনা মানবতার জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল, যা আজও প্রাসঙ্গিক।
মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা অনুসারে, নারীদের কেবল পরিবারের মধ্যে নয়, সমাজে ও রাষ্ট্রে সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করা হয়েছে। ইসলাম নারীর সম্পত্তি ও উত্তরাধিকারের অধিকার নিশ্চিত করেছে, যা যুগ যুগ ধরে সমাজের সকল স্তরের নারীকে সম্মানিত করেছে। জাহেলি আরব সমাজে যেখানে নারীদের ভোগের বস্তু হিসেবে দেখা হতো, সেখানে ইসলাম তাদের সম্মান, অধিকার ও নিরাপত্তা প্রদান করে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছে।
বিশ্বে নারী অধিকারের ধারণাটি আধুনিক যুগে প্রতিষ্ঠিত হলেও ইসলাম এটি দেড় হাজার বছর আগে উপস্থাপন করেছে। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে নারীকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে এবং রাসুল (সা.) বারবার নারীজাতির প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্বশীলতার কথা বলেছেন। উদাহরণস্বরূপ, হাদীসে দেখা যায় যে, রাসুল (সা.) তিনটি কন্যাসন্তানের প্রতি সদয় আচরণের মাধ্যমে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একইভাবে, নারীর প্রতি সদয় আচরণের উপদেশ দিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই, যে তার স্ত্রীর প্রতি উত্তম।”
বাংলাদেশে বর্তমানে নারী নির্যাতন ও বৈষম্য যেন এক অনিয়মিত প্রবাহে পরিণত হয়েছে। হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ এবং অন্যান্য নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা প্রতিদিন গণমাধ্যমে উঠে আসছে। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য মহানবী (সা.)-এর নির্দেশিত নারী নীতিমালা অনুসরণ করা আবশ্যক। আমাদের সমাজে নারীকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হলে, নারী নির্যাতন কমানো সম্ভব হবে এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :