জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পতিত আওয়ামী সরকারের সংসদ সদস্যদের নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৪২টি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছাড় করানোর ব্যবস্থা করবে। এর আগে নিলামের কথা থাকলেও বাড়তি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের মতে, এ প্রক্রিয়ায় অন্তত ৪০০ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় হতে পারে। তবে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, অতিরিক্ত শুল্কের কারণে এসব গাড়ি বিক্রি করা কঠিন হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে এসব গাড়ি বন্দরের কার শেডে পড়ে আছে। দ্বাদশ সংসদের সংসদ সদস্যদের অনেকে পালিয়ে যাওয়ার পর এই জটিলতা তৈরি হয়। আইন অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে গাড়ি ছাড় করাতে না পারলে নিলামে তোলার বিধান রয়েছে। এর ফলে ২৪টি ল্যান্ড ক্রুজার বাই পেপার নিলামের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে হস্তান্তর করা হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, “যদি আমদানিকারক যথাযথ শুল্ক পরিশোধ করে, তবে গাড়ি ছাড় করা হবে। না হলে নিলামের মাধ্যমে গাড়িগুলো বিক্রি করা হবে।”
এদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, “আমরা চাই বন্দরের জায়গা খালি হোক, সেটা নিলাম কিংবা ছাড় করানোর মাধ্যমে যেভাবেই হোক।”
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, এসব গাড়ির মধ্যে বেশিরভাগই টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার এবং ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো। আমদানি মূল্যে প্রায় ৬১ কোটি টাকার এ গাড়িগুলোর শুল্কহার অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, ৩ হাজার ৩৪৬ সিসির একটি ল্যান্ড ক্রুজার যার আমদানি মূল্য প্রায় ৯৮ লাখ টাকা, শুল্ক বাবদ ৮ কোটি ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন।
বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী মন্তব্য করেন, “অত্যধিক শুল্কের কারণে এসব গাড়ি ছাড় করা অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করাই যৌক্তিক।”
উল্লেখ্য, শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধাটি ১৯৮৭ সালে এইচ এম এরশাদের আমলে চালু হয়েছিল। তবে আইন প্রণেতাদের শুল্কমুক্ত গাড়ি সুবিধা নিয়ে বিতর্ক সবসময়ই চলমান।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :