শীতের প্রকৃতি নিজের সৌন্দর্য আর শীতলতার পরশে সবাইকে মোহিত করে। শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় মুক্তোর মতো দানা, ভোরের কাঁচা রোদ আর হিমেল বাতাস শীতের আগমন জানান দেয়। তবে শীতকাল নিয়ে আসে নানা রোগবালাই—জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, সর্দি-জ্বরের প্রকোপ। এসময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সঠিক খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতের অন্যতম উপকারী ফল হলো জলপাই, যা রোগ প্রতিরোধে প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে।
জলপাইয়ে রয়েছে ভিটামিন এ, সি ও ই, যা দেহে রোগজীবাণু ধ্বংস করে এবং ইমিউনিটি বাড়ায়। এতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে সুরক্ষিত রাখে। এটি কোলনের ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। জলপাইয়ের তেল উচ্চরক্তচাপ কমিয়ে হৃদপিণ্ডের রক্তপ্রবাহ ভালো রাখে, যা হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
গবেষণায় দেখা গেছে, জলপাই বা এর তেল ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
জলপাইয়ের স্কোয়ালিন এবং টারপেনয়েড নামক উপাদানগুলো ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিয়মিত জলপাই খেলে মরণঘাতি ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।
জলপাইয়ে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি ও এ, যা ত্বক ও চুলের জন্য বিশেষ উপকারী। এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে, চুলের গঠন মজবুত করে এবং সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।
জলপাইতে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট হার্ট ব্লক প্রতিরোধ করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি পিত্তথলির পাথর দূর করতে সহায়ক এবং হজম শক্তি বাড়ায়। এছাড়া এ ফল ওজন কমাতেও সহায়তা করে।
জলপাই সারা বছর পাওয়া না গেলেও শীতে এটি সহজলভ্য। সংরক্ষণ করতে চাইলে কাঁচা ফল লবণ পানিতে বা সেদ্ধ করে ফ্রিজে রাখা যায়। এছাড়া আচার তৈরি করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জলপাই রাখুন। এটি শুধু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়, বরং সুস্বাদু আচারের উপাদান হিসেবেও আদর্শ। শীতের সকালে গরম ভাত কিংবা খিচুড়ির সঙ্গে জলপাই আচার একটি অনন্য স্বাদ যোগ করে। জলপাইকে বলা যায় প্রকৃতির এক অসামান্য উপহার, যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :