শীতকাল মানেই প্রকৃতির অন্যরকম এক রূপ। কিন্তু শীতের সকাল যেমন মিষ্টি রোদ আর শিশিরের মায়ায় মোড়ানো, তেমনি অনেকের জন্য এটি অলসতারও সময়। এ সময় নিজেকে সক্রিয় রাখা কঠিন হলেও হাঁটার অভ্যাস বজায় রাখলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অনেক উপকার পাওয়া যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, শীতে শারীরিক পরিশ্রম কমে যায়, আর খাদ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। ক্যালরি ক্ষয়ের অভাবে শরীরে মেদ জমে। তাই শীতেও নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস রাখা জরুরি। এতে মেদ কমবে, বিপাক ক্রিয়া সক্রিয় থাকবে, এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
শীতের সকালের কুয়াশা এড়িয়ে নরম রোদ ওঠার পর বা বিকেলে হাঁটা সবচেয়ে ভালো। আরামদায়ক পোশাক ও জুতো পরে হাঁটুন। হাঁটার আগে শরীর গরম করতে ওয়ার্ম আপ করুন। শুরুতে ১০ মিনিটের জন্য হাঁটুন এবং ধীরে ধীরে সময় ও গতি বাড়ান। চাইলে জগিং বা হালকা দৌড়াতেও পারেন।
নিয়মিত হাঁটার ফলে—
হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: বিশুদ্ধ বাতাসে হাঁটার ফলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।
ওজন কমে: হাঁটায় ক্যালরি ক্ষয় হয় এবং পেটের অতিরিক্ত মেদ কমে।
রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে: সকালের হাঁটা ইনসুলিন ও গ্লুকোজ ক্ষয় করে।
ত্বক উজ্জ্বল হয়: ঘামের মাধ্যমে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায়।
মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়: হাঁটার সময় শরীর থেকে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা বিষণ্নতা দূর করে এবং কর্মস্পৃহা বাড়ায়।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিয়মিত হাঁটা অত্যন্ত উপকারী। এটি রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। টাইপ-১ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর।
শীতের সকালের তাজা বাতাসে হাঁটলে মন প্রফুল্ল হয়। যেকোনো সমস্যার নতুন সমাধান পেতে কিংবা কাজে গতি বাড়াতে এটি কার্যকর। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস সারাদিনের কার্যক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে।
শীতের সকালে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস আপনার শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন মাত্র ২০-৩০ মিনিট হাঁটা আপনাকে করে তুলতে পারে আরও উজ্জীবিত ও সজীব। আলস্য ঝেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ুন, শীতের সুন্দর সকালে হাঁটুন আর সুস্থ থাকুন।
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :