বাঁধাকপি, শীতকালীন সবজি হিসেবে পরিচিত, শুধু স্বাদে নয় বরং পুষ্টিগুণেও অনন্য। পাতাকপি নামেও পরিচিত এই সবুজ সবজিটি আমাদের দেশে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হয়। ভাজি, স্যুপ বা সালাদ হিসেবে সহজেই খাবারের তালিকায় জায়গা করে নেয় বাঁধাকপি। এর বৈজ্ঞানিক নাম ব্রেসিকা ওলেরেসিয়া।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ:
বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর পানি, আমিষ, খনিজ পদার্থ এবং খাদ্যআঁশ। এতে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়ামের মতো খনিজ উপাদান বিদ্যমান, যা হাড়ের সুস্থতায় ভূমিকা রাখে। ভিটামিন সি ও কে সমৃদ্ধ এই সবজি বার্ধক্যজনিত হাড়ের সমস্যা প্রতিরোধে কার্যকর।
ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা:
বাঁধাকপিতে থাকা গ্লুকোসাইনোলেটস নামক সালফারসমৃদ্ধ উপাদান ক্যানসার সৃষ্টিকারী টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। এতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ফ্রি রেডিকেল দূর করে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা:
ওজন কমাতে সহায়ক: বাঁধাকপিতে ফাইবারের পাশাপাশি ক্যালোরি খুব কম, যা পেট ভরায় কিন্তু ওজন বাড়ায় না।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
হজম প্রক্রিয়া সহজ: ফাইবারসমৃদ্ধ বাঁধাকপি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে।
আলসার প্রতিরোধ: বাঁধাকপির রস পেপটিক আলসার নিরাময়ে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
প্রাচীন চিকিৎসায় বাঁধাকপি:
গ্রিক ও মিসরীয় চিকিৎসায় বাঁধাকপি ব্যবহারের ঐতিহ্য প্রাচীন। এটি কনস্টিপেশন নিরাময় থেকে শুরু করে শরীরের টক্সিন দূর করতে ব্যবহৃত হতো।
উৎপাদন ও ইতিহাস:
বাঁধাকপির আদি নিবাস দক্ষিণ ইউরোপ হলেও বর্তমানে চীন, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়া এর প্রধান উৎপাদক দেশ। বাংলাদেশে বাঁধাকপির চাষ শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে।
শীতকালীন এই সুপারফুডটি কেবল পুষ্টির উৎস নয়, বরং নানা রোগ প্রতিরোধে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বাঁধাকপি যোগ করে সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকতে পারেন।
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :