মানবজীবনের মুক্তি ও চিরশান্তির প্রধান ভিত্তি হলো কালেমায়ে শাহাদাত, যার অর্থ, “আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।” যে ব্যক্তি আন্তরিক বিশ্বাস ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই কালেমা উচ্চারণ করে, সে মুসলমান হিসেবে গণ্য হয় এবং তার জন্য জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত হয়।
কালেমায়ে শাহাদাত মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের সফলতার মূল চাবিকাঠি। এই কালেমা পাঠ করার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার কঠিন পথ পরিক্রমায় আলোর সন্ধান পায় এবং পরকালে জান্নাতের সুখময় জীবনের অধিকারী হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) জিল মাজাজের বাজারে উচ্চকণ্ঠে আহ্বান করেছিলেন:
“হে মানবজাতি! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলো, সফল হবে।” (সহিহ ইবনু হিব্বান, হাদিস: ৬৫৬২)।
কালেমায়ে শাহাদাত পাঠের মাধ্যমে অগণিত পুণ্য অর্জন এবং পাপের ক্ষমা লাভ করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি একশবার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু’ পড়বে, সে দশজন দাসকে মুক্ত করার সমান সওয়াব পাবে, তার জন্য একশ পুণ্য লেখা হবে এবং একশ পাপ মুছে ফেলা হবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩২৯৩)।
কিয়ামতের দিন নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের জন্য সুপারিশ করবেন। যারা আন্তরিকতার সঙ্গে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর সাক্ষ্য প্রদান করবে, তারা এই সুপারিশের সবচেয়ে বেশি যোগ্য হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ লাভে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান হবে সেই ব্যক্তি, যে একনিষ্ঠচিত্তে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই বলে বিশ্বাস করেছিল।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৯৯)।
কালেমায়ে শাহাদাত পাঠকারীকে আল্লাহ জান্নাতে প্রবেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হজরত মুয়াজ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে আন্তরিকভাবে এই সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (আবু ঈমান, হাদিস: ১২৬)।
কালেমায়ে শাহাদাত মানবজীবনের সুখ, শান্তি ও চিরন্তন মুক্তির পরশপাথর। এটি পুণ্যের দুয়ার খুলে দেয় এবং পাপ থেকে মুক্তি দেয়। আসুন, আমরা অধিক পরিমাণে এই কালেমা পাঠ করি এবং ইহকাল ও পরকালের শান্তি লাভে অগ্রসর হই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন।
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :