পরিচ্ছন্নতা ও রুচিশীলতা এমন দুটি গুণ, যা মানুষের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যকে প্রকাশ করে। এটি কেবল সামাজিকভাবে নয়, ধর্মীয়ভাবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতাকে ইবাদতের অংশ হিসেবে বিবেচনা করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন” (সুরা বাকারা: ২২২)।
ইসলামের শিক্ষা অনুসারে, তওবা মানুষের অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, আর বাহ্যিক পবিত্রতা একজন ব্যক্তির বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রতিফলন ঘটায়। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন” (মুসলিম: ৯১)। তাই পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি জীবনযাপন মানুষের চরিত্র, আচরণ, ও দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও আকর্ষণীয় ও গ্রহণযোগ্য করে তোলে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) পরিচ্ছন্নতাকে স্বভাবজাত বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণিত হাদিসে বলা হয়েছে, গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা রাখা, মিসওয়াক করা, নখ কাটা, নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করা, এবং মলমূত্র ত্যাগের পর পানি ব্যবহার করা ইসলামের শুদ্ধতার অন্যতম শিক্ষা (মুসলিম: ২৬১)। এই অভ্যাসগুলো শুধু স্বাস্থ্যকর নয়, বরং মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য ও রুচিবোধের প্রতীক।
পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রেও ইসলাম সৌন্দর্য ও রুচিশীলতার সমন্বয়কে গুরুত্ব দিয়েছে। পবিত্র কুরআনে এসেছে, “হে মানবজাতি! আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, যা দেহের দোষ ঢেকে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। আর তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম” (সুরা আরাফ: ২৬)। তবে পোশাকের আড়ালে অহংকার, অশ্লীলতা, কিংবা অপচয় ইসলাম সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে।
পরিশেষে বলা যায়, পরিচ্ছন্নতা ও রুচিশীলতা কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য নয়; এটি অন্তরের পরিশুদ্ধতা, ধর্মীয় অনুশাসন ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। এই গুণাবলি ব্যক্তিকে আল্লাহর প্রিয় বানিয়ে তোলে এবং সমাজে তাকে প্রশংসিত করে তোলে।
আপনার মতামত লিখুন :