বাংলা চলচ্চিত্রে শক্তিশালী খল অভিনেতা হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন ওয়াসীমুল বারী রাজীব। পর্দায় নেতিবাচক চরিত্রে তার অনবদ্য সংলাপ আর ভয়েস ছিল যেন বাঘের গর্জনের মতো, যা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে তৈরি করত এক অন্যরকম অনুভূতি। দুর্দান্ত অভিনয় দক্ষতা, শক্তিশালী বাচনভঙ্গি এবং অনন্য এক্সপ্রেশন দিয়ে নিজেকে করে তুলেছিলেন যে কোনো অভিনেতার জন্য অনুকরণীয়।
আজ, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর), অভিনেতা রাজীবের মৃত্যুর ২০ বছর পূর্তি। ২০০৪ সালের এই দিনে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে মাত্র ৫২ বছর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। তবে তার অভিনয় ও চরিত্রের শক্তি এখনও দর্শকের হৃদয়ে জীবন্ত।
রাজীব প্রায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন, যেখানে তাকে খলচরিত্রেই বেশি দেখা গেছে। ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি পটুয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করা রাজীব সিনেমায় আসার আগে তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ১৯৮১ সালে ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। এরপর কাজী হায়াতের ‘খোকন সোনা’ সিনেমার মাধ্যমে তারকা খ্যাতি পান তিনি।
শুধু অভিনয়ে নয়, রাজীব ছিলেন শিল্পী সমাজেরও একজন নেতা। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস মুভিজের পাশাপাশি বিএফডিসির ব্যবস্থাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয়তাবাদী চলচ্চিত্র পরিষদের সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। তার নেতৃত্বগুণের ছাপ রেখে গেছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে।
চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গুণী অভিনেতা শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছেন— ‘হীরামতি’ (১৯৮৮), ‘দাঙ্গা’ (১৯৯১), ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’ (২০০০), এবং ‘সাহসী মানুষ চাই’ (২০০৩) চলচ্চিত্রের জন্য। তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে— ‘উছিলা’, ‘মিয়া ভাই’, ‘বীরাঙ্গনা সখিনা’, ‘হুমকি’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘মৃত্যুদণ্ড’, ‘স্বপ্নের বাসর’সহ আরও অনেক।
রাজীবের অভিনয়শৈলী আজও ঢালিউডে অনুপ্রেরণার এক বিরল প্রতীক।
আপনার মতামত লিখুন :