ভেষজ উদ্ভিদ ব্যবহারের ঐতিহ্য বহু প্রাচীন। মানবস্বাস্থ্য রক্ষায় ভেষজ উদ্ভিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা মানব সভ্যতার আদিকাল থেকেই রয়েছে। এ ধরনের একটি অনন্য উদ্ভিদ হচ্ছে ফুলকপি, যা শীতকালে আমাদের রান্নাঘরকে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ করে। শ্বেত ফুলকপি ছাড়াও বর্তমানে হলুদ, সবুজ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি বাজারে সহজলভ্য হয়েছে, যা সুস্বাদু ও পুষ্টিমানে বিশেষ গুণসম্পন্ন।
কৃষি বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এসব রঙিন ফুলকপি সাদা ফুলকপির মতোই স্বাদে, তবে পুষ্টিমানে এগুলো একটু ভিন্ন। প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যাল সমৃদ্ধ এই রঙিন ফুলকপি ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
এর মধ্যে থাকা ‘অ্যান্থোসায়ানিন’ এবং ‘ক্যারোটিনয়েড’—দুটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট—ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং দেহকে বিভিন্ন ধরনের টিউমার থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে বেগুনি ও কমলা রঙের ফুলকপির অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা কমায় এবং হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে মাত্র ৩০ গ্রাম পরিমাণ ফুলকপির কচি পাতা গ্রহণ করলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি অর্ধেকে নেমে আসে। এ ছাড়াও, এসব কপির মধ্যে থাকা সালফোরাফেন কোষের জিন কার্যক্রমকে সক্রিয় করে এবং ক্যানসার কোষ ধ্বংসে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ ফুলকপি হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে বিশেষ সহায়ক।
ফুলকপির এই নতুন ধরনের চাষাবাদ ২০২১ সালে বাংলাদেশে শুরু হয়। বাজারে সহজলভ্য এসব রঙিন ফুলকপি চোখে ও মনে দারুণ আনন্দ এনে দিয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, রঙের তারতম্য থাকলেও প্রতিটি ফুলকপিতেই রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের অনন্য সংমিশ্রণ, যা ক্যানসার প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ত্বক, চোখ ও হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রঙিন ফুলকপি সুস্থ জীবনের জন্য একটি অসাধারণ ভেষজ খাদ্য।
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :