পুরান ঢাকার বকশিবাজার খানকা শরীফের কথিত পীর সাঈদ আনোয়ার মোবারকীর প্রতারণা ও কুকর্মের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১২টার দিকে তার ৫ম স্ত্রী তুলি ও ৬ষ্ঠ স্ত্রী কুলসুম বেগমের উদ্যোগে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র সমন্বয়ক হাসিবুর রহমানসহ আরও অনেকে।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, সাঈদ আনোয়ার মোবারকী বাবু তার ভক্তদের আস্থার সুযোগ নিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার আস্তানায় প্রতি সপ্তাহে মুরিদদের নিয়ে ধর্মীয় বয়ান ও দীর্ঘ মোনাজাতের আড়ালে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতারণা। পরনে ধবধবে পাঞ্জাবি-পায়জামা ও মাথায় লম্বা টুপি পরা এই কথিত পীরের বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ।
তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ উঠে, তিনি একাধিক বিয়ে করে নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেন। নতুন স্ত্রীর কাছে নিজেকে ধার্মিক ও পীর হিসেবে উপস্থাপন করে কিছুদিন পরই তাদের থেকে অর্থ আদায় করেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করে তার বিশ্বস্ত সহচর সগীর, যিনি কখনো নিজেকে আওয়ামী লীগের গডফাদার, কখনো পুলিশের সোর্স, আবার কখনো বিএনপির নেতা পরিচয় দেন।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, সাঈদ আনোয়ার ও তার সহযোগী সগীর ইমো ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নারীদের প্রলুব্ধ করে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন।
ভুক্তভোগী এক নারী জানান, একাধিকবার থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো প্রতিকার পাননি। তাদের দাবি, বাবুর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী তুলি অভিযোগ করেন, সাঈদ আনোয়ার মোবারকীর খানকা শরীফে বিভিন্ন মহলের লোকজন ও নারীদের নিয়ে জলসার আয়োজন করা হয়, যেখানে মূলত প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। ভুক্তভোগীরা এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ এবং এই ভণ্ড পীরের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে সাঈদ আনোয়ার মোবারকীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার পক্ষ থেকে পরিচয়দানকারী ভুয়া সাংবাদিক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী প্রতিবেদককে টাকার বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে জানা যায়, বাংলা ভিশন অফিসে এমন কোনো সাংবাদিক নেই।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত শুরু করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করেছেন মানববন্ধনে উপস্থিত সকলে। নারীদের প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে তারা অনুরোধ জানিয়েছেন।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :