জুলাই-আগস্টে সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখতে এসে ক্ষুব্ধ প্রতিবাদের মুখে পড়লেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) এই ঘটনা ঘটে। আহতদের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকও উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার দুপুরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে নিয়ে নিটোর হাসপাতালে যান নূরজাহান বেগম। সেখানে চতুর্থ তলার পুরুষ ওয়ার্ডে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে রোগীদের খোঁজ-খবর নেওয়ার পর তারা নিচে নেমে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে, তৃতীয় তলার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আহত রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাদের উপেক্ষা করা হয়েছে বলে।
আহতদের অভিযোগ, পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টার প্রোটোকলে থাকা একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি এক রোগীকে ধাক্কা দেন। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধরা অভিযোগ করেন, উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত শুধু কিছু বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন, অথচ স্থানীয় সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
বিক্ষুব্ধ আহতরা উপদেষ্টা ও হাইকমিশনারের গাড়ি ঘিরে ফেলেন। পরিস্থিতি এমন হয় যে, একজন গাড়ির সামনে বসে পড়েন, আরেকজন উঠে পড়েন গাড়ির ছাদে। ক্ষুব্ধ জনতা উপদেষ্টার গাড়িতে কিল-ঘুষি মারেন এবং গাড়ির চালককে নামতে বলেন। এক পর্যায়ে উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিকল্প একটি গাড়ি নিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এরপর বিক্ষোভকারীরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রটোকলের গাড়ি আটকে রাস্তায় অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারী মো. হাসান নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, “আমাদের ওয়ার্ডে ৪৮ জন মানুষ চিকিৎসাধীন। অথচ তারা তাদের পছন্দের কিছু বিদেশি সাংবাদিক নিয়ে এসে দু-একজনের সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। আমাদের সমস্যার কথা শোনার কোনো সুযোগই দেননি। আমি তিন মাস ধরে সামান্য চিকিৎসা পাচ্ছি, পায়ে নয়টি অপারেশন করার পরও সুস্থ হতে পারিনি।”
নিটোরের মূল ফটক বন্ধ করে বিক্ষুব্ধরা রাস্তায় অবস্থান নেওয়ায় আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হয়।
এই ঘটনার ফলে আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে গেছে এবং তারা অবিলম্বে উপযুক্ত চিকিৎসা ও সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :