চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক বিপ্লব উদ্যানের নতুন মার্কেট নির্মাণের স্থাপনা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, এ উদ্যান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সূচিত হয়েছিল, যা ইতিহাসে অমলিন হয়ে থাকবে।
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে নগরীর দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানে শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে তিনি এ কথা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের এই বিপ্লব উদ্যান থেকে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। তখন তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একজন মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের এই ঘটনার মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সরাসরি যোগ দেন। কর্নেল জানজুয়াকে হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনীর প্রতি বিদ্রোহ ঘোষণা করা ছিল একটি সাহসী ও তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। মেয়র মনে করিয়ে দেন, এ বিদ্রোহের কারণে জিয়াউর রহমানের কোর্ট মার্শাল হতে পারত, কিন্তু তিনি দেশের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন।
মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে ইতিহাসকে বিকৃত করে বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। এভাবে ইতিহাসকে বিকৃত করা উচিত নয়, বরং ইতিহাস তার নিজের গতিতে চলবে। আওয়ামী লীগের সঠিক ইতিহাস যেমন বিকৃত হওয়া উচিত নয়, তেমনি বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ইতিহাসও বিকৃত হওয়া উচিত নয়। আমাদের উচিত সঠিক তথ্য সংরক্ষণ করা যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে।”
মেয়র আরও বলেন, “মাওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হকসহ বিভিন্ন জাতীয় নেতার অবদান অমর রাখতে হবে। জাতির এই সব মহানায়করা বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাদের অবদান আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং এটি বিকৃত করা যাবে না। বিএনপি কখনও নামফলক মুছে দেওয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।”
চসিক মেয়রের মতে, নতুন প্রজন্ম যাতে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে, সে জন্য সঠিক তথ্য সংরক্ষণ এবং প্রচার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেয়র আশা করেন, বিপ্লব উদ্যানের স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হলেও এর ঐতিহাসিক স্মৃতি অমলিন থাকবে এবং এ উদ্যানটি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এসময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব আশরাফুল আমিনসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :