মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাতের জেরে গত ৮-৯ দিনে প্রায় ১৪ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সীমান্তের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে আসছে, যার মধ্যে মংডু এলাকা থেকে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা বেশি।
সীমান্তের নোম্যানস ল্যান্ডে আরও প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে আরও ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা এই দফায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।
৩ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, নতুন করে প্রায় ৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। তিনি বলেন, “আমাদের চেষ্টা করতে হবে এই অনুপ্রবেশ ঠেকানোর, কারণ নতুন করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে টেকনাফ ও উখিয়া এলাকার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে নতুন করে ১৩-১৪ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান নিয়েছে। মংডু সীমান্তে আরও ৭০ হাজার রোহিঙ্গা অপেক্ষায় রয়েছে। বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কড়া নজরদারির মধ্যেও কিছু দালালের সহায়তায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা ইউনুস আরমান জানিয়েছেন, রাখাইনে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেখানে আরাকান আর্মি ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে, যার ফলে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে।
টেকনাফের সাবেক কাউন্সিলর নুরুল বাসার বলেন, “সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে এবং দালালেরা তাদের সহায়তা করছে। তারা ক্যাম্পে অবস্থান না নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে কক্সবাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে আশ্রয় নিচ্ছে।”
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা জানিয়েছেন, ক্যাম্পে নতুন রোহিঙ্গারা প্রতিদিন প্রবেশ করছে, তবে এখনও কোনো তালিকা তৈরি করা হয়নি এবং সরকারের থেকে কোনো নির্দেশনা মেলেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অনুপ্রবেশ বাংলাদেশে নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে এবং সরকারের উচিত কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করে এই সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজা।
তথ্য সূত্র: ডয়চে ভেলে
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :