দারিদ্র্য ও সচ্ছলতা মানব জীবনের চিরায়ত বাস্তবতা। আল্লাহ তায়ালা মানুষের মাঝে অর্থবিত্তের পার্থক্য সৃষ্টি করেছেন, যা মানুষকে ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার পরীক্ষা হিসেবে উপস্থাপন করে। কেউ আল্লাহর দানকৃত সম্পদ সঠিকভাবে ব্যয় করে ধনাঢ্যতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, আবার কেউ সম্পদ পেয়ে আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হন। দারিদ্র্যও তেমনই একটি কঠিন পরীক্ষা, যা ধৈর্য ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হতে হয়।
আল্লাহ বলেন, “আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মালের ক্ষতি ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও” (সুরা বাকারা : ১৫৫)। তাই দারিদ্র্যের সময়ে ধৈর্য ধারণ করা অপরিহার্য। আল্লাহর উপর আস্থা রাখা এবং তাঁর নিকট সাহায্য চাওয়া দরকার, কারণ রিজিকের মালিক তিনিই। আল্লাহ বলেন, “কষ্টের সঙ্গেই রয়েছে সুখ” (সুরা ইনশিরা : ৬)।
দারিদ্র্যের সময় শয়তান হতাশা ও ভয় ছড়াতে চায়, যেন মানুষ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়। আল্লাহ বলেন, “শয়তান তোমাদের দরিদ্রতার ভয় দেখায় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ করে। আর আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন” (সুরা বাকারা : ২৬৮)। সমাজে দরিদ্ররা প্রায়শই অবহেলিত ও অসম্মানিত হয়। ধনীরা তাদের অধিকার লঙ্ঘন করে এবং তাদের গুরুত্বহীন করে তোলে।
অথচ আল্লাহ দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দান, সদকা ও জাকাতের মাধ্যমে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি সদকা গোপনে দাও, তা তোমাদের জন্য উত্তম” (সুরা বাকারা : ২৭১)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তুমি মুমিন নও, যদি তোমার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে” (আদাবুল মুফরাদ : ১১২)।
দারিদ্র্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রয়োজন আল্লাহর উপর ভরসা রাখা, ধৈর্য ধারণ করা, এবং ইবাদত বাড়ানো। হতাশা কখনো আল্লাহর রহমত থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে নিতে পারে না। আল্লাহ আমাদেরকে সবসময় তাঁর রহমতের উপর বিশ্বাস রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন, “তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না” (সুরা যুমার : ৫৩)।
আপনার মতামত লিখুন :