গাজীপুর জেলার শ্রীপুর তুলা বীজ বর্ধন খামারের আওতাধীন “তুলা উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা কর্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে তুলা উন্নয়ন বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রমটি পাঁচ বছর মেয়াদী ছিল। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বেশিরভাগ প্রকল্পের কর্মচারীদেরকে প্রকল্পের মেয়াদ শেষে রাজস্ব খাতের অন্তর্ভুক্তি করার বিধান থাকলেও তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তার খামখেয়ালীতে “শক্তিশালী প্রকল্পে” কাজ করা দেশের বিভিন্ন তুলা খামারে প্রকল্পের ১৪জন কর্মচারীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। চাকুরী না থাকায় দীর্ঘদিন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
একাধিক ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশের প্রচলিত আইন অনুসরণ করে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন “গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের” অধীনে পাঁচ বছর চাকুরী করে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিপত্র অনুযায়ী প্রকল্পের কার্যক্রম শেষে প্রকল্পের অধীনে সকলকে রাজস্ব খাতের অন্তভুর্ক্তি করে নেয়া হবে। রাজস্ব খাতে নেয়ার জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ড,খামারবাড়ি যোগাযোগ করলে করে দিব, করা হবে বলে কালক্ষেপণ করে আসছিল। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে প্রায় তিন বছর অধিক সময় অপেক্ষা করে চাকুরী রাজস্ব খাতে দিতে ন্যায় বিচারের আশায় গত ২০১৬ সালে হাইকোর্টে ৮১৯৬/২০১৬নং মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি দীর্ঘ শুনানির পর প্রকল্পে কর্মরত সকল কর্মচারীদেরকে রাজস্ব খাতে অন্তভুক্তকরণের জন্য ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর এক ঐতিহাসিক রায় দেন। মহামান্য হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তুলা উন্নয়ন বোর্ড,খামারবাড়ি,আপিল বিভাগে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল (সিপিএল এ) নং-২২২৭/২০১৭ দায়ের করলে আদালত বিগত ২৩আগষ্ট’২০১৭ তারিখে হাইকোর্ট বিভাগের রায় সংশোধন পূর্বক আবেদনকারীগণকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।
পুনরায় ওই রায়ের বিরুদ্ধে তুলা উন্নয়ন বোর্ড সিভিল রিভিউ পিটিশন ২২৭/২০১৮ দায়ের করলে আদালত ১৫ নভেম্বর’২০১৮ খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা উচ্চ আদালতের রায়গুলোকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা বারবার অমান্য করায় সচিব,জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয় ও নির্বাহী পরিচালক,তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে প্রতিপক্ষ করে কনটেম্পট ৩৫৬/২০১৯ নং মামলা দায়ের করেন।
আদালত মামলাটিকে আমলে নিয়ে প্রতিপক্ষদের আগের সকল রায় এবং আদেশ পরবর্তী দু’সপ্তাহের মধ্য বাস্তবায়ন করতে এক নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের ওই নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় স্বারক নং৮৫/৪জুন ২০২২ইং এবং কৃষি মন্ত্রনালয়ের আইন ও অধি শাখা,স্বারক নং ১৮৪/২৮ নভেম্বর ২০২২ইং তারিখে পৃথক পত্রে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালককে দ্রুত রায়টি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। উচ্চ আদালত এবং মন্ত্রনালয়ের রায় ও নির্দেশ কোন ক্ষমতাবলে বা অদৃশ্য কারনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করছেনা তা ভুক্তভোগীরা বোধগম্য নয়। ভুক্তভোগীদের দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে চাকুরী রাজস্ব খাতে আত্তীকরণ করে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রবর্তনে ভুমিকা রাখবেন। আর তা না করা হলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা ছাড়া ভুক্তভোগীদের বিকল্প কিছু করার নেই। এদিকে সকল ভুক্তভোগীদের সরকারি চাকুরীর বয়সসীমাও শেষ।
তাদের সাথে কথা বলতেই কান্নাজড়িত কন্ঠে আক্ষেপ আর হতাশার কথা শুনিয়ে বলেন, কর্তৃপক্ষ কার্যক্রর কোন ব্যবস্থা না নিলে তাদের আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন পথ খুলা নেই।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) কৃষিবিদ ড, মো. ফখরে আলম ইবনে তাবিবের সঙ্গে এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করে বলেন, মিটিংয়ে আছি পরে কথা বলি। পরে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :