ইসলামে “হেদায়েত” শব্দটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার অর্থ হলো সঠিক পথের দিশা পাওয়া বা অন্যকে সেই পথে পরিচালিত করা। পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে হেদায়েতের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। সুরা ফাতেহার মতো গুরুত্বপূর্ণ সূরাতেই আমরা আল্লাহর কাছে সরল সঠিক পথের প্রার্থনা করি।
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, হেদায়েত হলো সেই পথপ্রদর্শন, যা রাসুল (সা.) ও তাঁর অনুসারীরা অনুসরণ করেছেন। কুরআনের সুরা রাদ-এর ৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে পথপ্রদর্শক।” অর্থাৎ, আল্লাহ প্রত্যেক জাতির জন্য সুপথের নির্দেশনা দিয়েছেন।
তবে হেদায়েত একান্তই আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। কোনো মানুষ নিজের ইচ্ছায় বা ভালোবাসায় অন্যকে সৎপথে আনতে পারে না। পবিত্র কুরআনে সুরা কাসাসে আল্লাহ বলেন, “আপনি যাকে ভালোবাসেন, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনেন এবং তিনিই ভালো জানেন সৎপথ অনুসরণকারীদের।”
রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর চাচা আবু তালিবকে অনেক ভালোবাসতেন, কিন্তু আল্লাহর প্রজ্ঞার অনুকূল না হওয়ায় তিনি হেদায়েত লাভ করতে পারেননি। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, “আল্লাহই ভালো জানেন কে হেদায়েতের যোগ্য এবং কে পথভ্রষ্ট হবে।”
সঠিক পথে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা অত্যন্ত আবশ্যক। সুরা ফাতেহায় আল্লাহ আমাদের শিখিয়েছেন, “আমাদের সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করুন।” রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বদা হেদায়েতের দোয়া করতেন, যদিও তিনি পাপমুক্ত ছিলেন। তাঁর দোয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো, “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সঠিক পথনির্দেশনা, আল্লাহভীতি, চারিত্রিক নির্মলতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি।”
হাদিসে আল্লাহ বলেন, “তোমরা সবাই পথভ্রষ্ট, শুধু সে ছাড়া যাকে আমি পথ দেখাই। সুতরাং আমার কাছে হেদায়েত চাও, আমি তোমাদের হেদায়েত দান করব।” এই হাদিসের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে হেদায়েতের জন্য দোয়া করতে হবে। যারা আল্লাহর কাছে সঠিক পথের দোয়া করবে, আল্লাহ তাদের সেই পথ দেখাবেন।
এভাবে, সঠিক পথে চলার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা আমাদের জন্য অপরিহার্য।
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :