বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগটি সব বয়সী মানুষের মধ্যে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এমনকি শিশুদের মধ্যেও। ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে হার্টের সমস্যা, যেমন হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিয়োর, এবং হার্ট ব্লকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এই পরিস্থিতিতে ডায়াবেটিসজনিত একটি গুরুতর হার্টের রোগের নাম ‘ডায়াবেটিক কার্ডিয়োমায়োপ্যাথি’।
চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিসের কারণে সব সময় মৃত্যু সরাসরি রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির জন্য না হলেও, যখন রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, তখন হার্টের কার্যক্ষমতা ২০-২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এর ফলে হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হৃদপেশিতে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, যা কার্ডিয়োমায়োপ্যাথির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
কার্ডিয়োমায়োপ্যাথি হল একটি হৃদপেশির রোগ, যেখানে হৃৎপিণ্ডের পেশি শক্ত হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে পড়ে এবং হার্ট ঠিকমতো রক্ত ও অক্সিজেন পাম্প করতে পারে না, যা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি বাড়ায়। এসময় হৃদ্যন্ত্র হঠাৎ করে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, যার ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে মস্তিষ্কে, অক্সিজেন পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় রোগীর শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ‘অ্যাথেরোসক্লেরোসিস’-এর ঝুঁকিও বেশি থাকে। এই অবস্থায় ধমনীর দেওয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমে ‘প্লাক’ তৈরি করে, যা ধমনি সংকীর্ণ করে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ায়।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত এবং বছরে অন্তত একবার হার্টের চেকআপ করিয়ে নেওয়া উচিত। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে স্থূলতা এবং লিপিড লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে হার্টের রোগের সম্ভাবনা অনেকখানি কমে যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :