বাংলাদেশে প্রকৃত রপ্তানি ও সরকারি সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্যের মধ্যে বড় ধরনের গড়মিল পাওয়া গেছে। গত ২৩ মাসে ইপিবি রপ্তানির হিসাব ২৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বেশি দেখিয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য প্রকাশের পর জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রকৃত রপ্তানির পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে ৪০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
ইপিবি সর্বশেষ ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করে, যেখানে ২৩ মাসে রপ্তানি ১০৭ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার দেখানো হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃত রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮০ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। এই হিসাবে, ইপিবি ২৬ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বেশি রপ্তানি দেখিয়েছে।
আইএমএফের চাপের ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে মাসভিত্তিক প্রকৃত রপ্তানির তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করে, যার পরই ইপিবির তথ্যের গড়মিল প্রকাশ্যে আসে। এর পর থেকে ইপিবি তাদের রপ্তানি তথ্য প্রকাশ বন্ধ রেখেছে। সাধারণত ইপিবি প্রতি মাসের শেষে পরবর্তী সপ্তাহে রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করলেও চলতি আগস্ট মাস শেষ হতে চললেও এখনো জুন মাসের তথ্য প্রকাশ করেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৮১ কোটি ডলার, যেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এটি ছিল ৪ হাজার ৩৩৬ কোটি ডলার। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবছরে রপ্তানি ২৫৫ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একই রপ্তানি একাধিকবার গণনা এবং শিপমেন্ট বাতিলের পরও তা রপ্তানির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রাখার কারণে এই গড়মিল দেখা দিয়েছে। এর ফলে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
প্রকৃত রপ্তানি তথ্য প্রকাশের পর জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২২ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার, যা পূর্বে দেখানো মাত্র ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া, চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারে, যা পূর্বে ৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হিসেবে দেখানো হয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :