বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। বুধবার বিকাল ৪টার পর বিএনপির সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ বক্তব্য দেন।
তারেক রহমান বলেন, “বিচারের ভার নিজের হাতে তুলে নেবেন না। মনে রাখবেন, নৈরাজ্যের বদলে নৈরাজ্য কোনো সমাধান নয়।”
বাংলাদেশ স্বৈরাচারের কবল থেকে স্বাধীন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এর জন্য অনেক প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। গণতন্ত্রের বিজয়ের ইতিহাসে এ মানুষগুলো অমর হয়ে থাকবেন।”
তিনি আরও বলেন, “৫২-৭১ কিংবা ৯০ এর মতো দেশের ছাত্রসমাজ বিজয়ের অমর একটি ইতিহাস রচনা করেছে। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে নতুন বিজয়। এ জন্য গণতন্ত্রকামী সব দলের পক্ষ থেকে দল-মত নির্বিশেষে দেশের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”
তারেক রহমান বলেন, “শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে হাজারো শহীদের রক্ত রঞ্জিত বিপ্লবের প্রথম ধাপ সফল হয়েছে মাত্র। ছাত্র-জনতার এই রক্তঝরা বিপ্লবের চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। তাই বিপ্লবের লক্ষ্য বাস্তবায়নে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।”
দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করতে একটি চক্র কাজ করছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “প্রশাসনের প্রতি আহ্বান আইনশৃংখলা পরিস্থিতি শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করুন। কারো প্রতি যেন অবিচার না হয়, কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকে। ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা আমাদের এত বড় অর্জন বিনষ্ট হতে দিতে পারি না।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপিসহ দেশের গণতন্ত্রকামী সব দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান, ষড়যন্ত্রকারীদের নৈরাজ্যের কাছে আমরা হার মানতে পারি না। গির্জা, মন্দির, প্যাগোডার নিরাপত্তা দিন। ধর্ম-বর্ণ-বিশ্বাস দিয়ে মানুষকে মাপা যাবে না। একজন ব্যক্তির পরিচয় তিনি মানুষ। আপনার পাড়া-প্রতিবেশী যেখানেই কেউ এমন কিছু করার চেষ্টা করবে, বন্ধু হিসেবে তার নিরাপত্তায় আপনি ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বসবাসকারী সবার একটিই পরিচয়, আমরা বাংলাদেশি।”
পুলিশ জনগণের শত্রু নয় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “শেখ হাসিনা বিনাভোটে থাকার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, পুলিশের ভেতর একটি চক্র ছাড়া অধিকাংশ পুলিশ সদস্য চাকরিবিধি মেনে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছেন। হাসিনার পালানোর পর একটি চক্র দেশের পুলিশকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। এই মুহূর্ত থেকে পুলিশ কিংবা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বন্ধ করুন।”
আপনার মতামত লিখুন :