কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে রবিবার বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সমর্থনে শিক্ষার্থী ও জনতার বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মজমপুর গেট থেকে সকাল ১১টায় শুরু হওয়া মিছিলে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং অভিভাবকরাও অংশ নেন, তবে রাজনৈতিক দলের কর্মীরাই ছিলো সংখ্যাগরিষ্ঠ।
মিছিলটি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সড়ক দিয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে চৌড়হাসে পৌঁছে। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা টার্মিনালের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর চড়াও হয়ে তাদের ধাওয়া করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়ে পিছু হটে, এবং বিক্ষুব্ধ জনতা চৌড়হাস মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
বিক্ষোভ চলাকালে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের নিচে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয় এবং রাস্তা অবরোধ করে আগুন ধরানো হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা মজমপুরের দিকে মিছিল নিয়ে অগ্রসর হন। কুষ্টিয়া মজমপুর রেল গেট থেকে পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর মুরালে ভাঙচুর চালানো হয় এবং ভাস্কর্যের গলায় জুতার মালা পরিয়ে আগুন ধরানো হয়। মজমপুর গেটের ট্রাফিক অফিস, চৌড়হাস ফুলতলা মোড়ের ব্যাংক, নতুন জেলা পরিষদ ভবন, ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্প, কুষ্টিয়া মডেল থানা, পত্রিকা অফিস, জেলা আওয়ামী লীগ অফিস, বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটসহ বেশ কিছু স্থাপনায় ভাঙচুর করা হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় এবং পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় বেশ কিছু আন্দোলনকারী আহত হন। সংঘর্ষের সময় দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের নারী সাংবাদিক নেতা এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর সহ-সভাপতি আফরোজা আক্তার ডিউসহ বেশ কয়েকজন টেলিভিশন ও ফটো সাংবাদিক আহত হন।
অবশেষে, কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনের পদক্ষেপের ব্যর্থতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা। আহত সাংবাদিকদের হাসপাতালে রেখে তারা ক্যামেরা, কলম ও মাইক্রোফোন জমা দিয়ে আন্দোলনে নামেন এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে সমবেত হন। তারা “এক দফা, এক দাবি, এসপি তুই কবে যাবি” স্লোগান দিয়ে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপারের প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে দিনটি কুষ্টিয়া জেলার জন্য ছিলো উত্তাল এবং সহিংসতার।
আপনার মতামত লিখুন :