আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরোধিতা এবং পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। সময়মতো এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
আন্দোলনগুলো নিয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সরকার এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষেই আছে। শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের আজ নির্ধারিত কোনো কর্মসূচি নেই, সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। তারা উচ্চ আদালতে মামলা করে আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে, এটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।”
সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট রায় দেওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলন করে আসছে। তাদের দাবি, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। এছাড়া কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
রোববার ও সোমবার ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করে, যার ফলে শহরজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
আন্দোলন সমন্বয়ের জন্য ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে ৬৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দাবি পূরণ না হলে তারা সারাদেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
কোটা নিয়ে সরকারের অবস্থান সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, “২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী পরিপত্র জারি করে কোটামুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং সেই অনুযায়ী এতদিন সরকারি কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেছে এবং আশা করছি শিগগিরই শুনানি হবে। আন্দোলনকারীরা কোটা সংস্কার চায়, কোটা বাতিল নয়।”
এদিকে, সর্বজনীন পেনশনের নতুন স্কিম ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে আছেন। তারা মনে করছেন, এই স্কিমে যুক্ত হলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কবে বৈঠক করবেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা তাদের আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছি। সময়মত এর সমাধান হবে, এটাই আমরা আশা করি।”
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদ ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।
ভিসি/এএস
আপনার মতামত লিখুন :