হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি’র জানাজা বুধবার তেহরানে অনুষ্ঠিত হবে।
সাবেক প্রেসিডেন্টের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিপুল সংখ্যক শোকার্ত মানুষ অংশ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শোক মিছিলের আগে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি জানাজা পরিচালনা করবেন। রাইসি ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানসহ আরও সাত কর্মকর্তার জানাজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নিহত প্রেসিডেন্টের প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রশংসা জানিয়ে রাজধানী তেহরান নানা ধরনের ব্যনারে ছেয়ে গেছে। রাজধানীবাসীকে ফোনে পাঠানো ম্যাসেজে শেষযাত্রা ও জানাজায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে রাজধানীতে একদিকে যেমন সাবেক প্রেসিডেন্টকে ‘সেবার শহীদ’ বলে অভিনন্দন জানিয়ে বিশাল ব্যানার উঠছে, অপরদিকে তার বিরোধীরা ‘সুবিধাবঞ্চিতদের সেবককে বিদায়’ বলে ব্যানার উড়াচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, রাইসি’র শেষ যাত্রায় বিদেশী বিশিষ্টজনরাও অংশ নেবেন। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে এই শেষ যাত্রা শহরের কেন্দ্রস্থল এনঘেলাব স্কোয়ারে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এরআগে মঙ্গলবার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি’র জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে হাজারো শোকার্ত মানুষ শামিল হন।
তাবরিজ থেকে রাইসি ও তাঁর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানের মরদেহ ইরানের মধ্যাঞ্চলের ঐতিহাসিক কোম শহরে নেওয়া হয়। সেখানেও তাঁদের জানাজা হয়। পরে রাইসি ও আবদোল্লাহিয়ানের মরদেহ তেহরানে নিয়ে আসা হয়।
ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাশহাদে রাইসির জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সেখানেই তাঁর দাফন কাজ সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, সদ্য প্রয়াত প্রেসিডেন্ট রাইসিআজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত রোববার দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন।
সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের একটি বহর নিয়ে রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারাতাবরিজে ফিরছিলেন।
পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। কিন্তু অন্য দু’টি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
দুর্ঘটনার পর পরই ব্যাপক উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। এ কাজে ৭৩টি উদ্ধারকারী দল অংশ নেয়। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে বিঘিœত হয়।
শেষ পর্যন্ত ইরানের রেডক্রিসেন্ট বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায়। দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘন্টা পর সোমবার সকালে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে রাইসিসহ হেলিকপ্টারের সকল আরোহীর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
রাইসি ২০২১ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। রাইসি (৬৩) সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাকে ব্যাপকভাবে খামেনির উত্তরসূরি ভাবা হতো।
সুত্রঃ বাসস
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :