সর্বশেষ :

বগুড়ায় ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরির রহস্য উদঘাটন ও তিনজন আসামি সহ স্বর্ণ উদ্ধার


জাহিদ হাসান, বগুড়া:
প্রকাশের সময় : মে ৯, ২০২৪ । ২:৫০ অপরাহ্ণ
বগুড়ায় ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরির রহস্য উদঘাটন ও তিনজন আসামি সহ স্বর্ণ উদ্ধার
বগুড়া জেলা পুলিশের অভিযানে সদর থানা এলাকায় সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামী গ্রেফতার ও স্বর্ণ উদ্ধার। গ্রেফতার কৃতরা হলেন,
১। মোঃ রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাঁটা রুবেল (২৭) পিতা মোঃ জুলহাজ ওরফে ঝরু সাং কদমতলা, থানা-মুরাদনগর, জেলা-কুমিল্লা।
২। ইব্রাহিম ওরফে নয়ন (৩০) পিতা শ্রী নন্দ সাহা, সাং দেওভোগ, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ।
৩। মোঃ শাহাজালাল (৪৬) পিতা মৃত নুরুল ইসলাম, সাং কমলাপুর, থানা-কুমিল্লা দক্ষিন সদর, জেলা-কুমিল্লা (স্বর্ণের দোকানদার, সে চোরাই স্বর্ণ অভিযুক্তদের নিকট থেকে ক্রয় করে।
উদ্ধারকৃত আলামত হিসেবে সংগ্রহ করেন,
১। বোল্ট কাটার-০১টি (যা বিভিন্ন প্রকার তালা কাটায় ব্যবহৃত হয়।
২। স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার ১৭ ভরি ০৮ আনা ০৪ রতি।
৯ই মে দুপুর ১২ টায় বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বগুড়া জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম পিপিএম (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সাংবাদিকদের একপ্রেস ব্রিফিং এসব বিষয় অবহিত করেন।
 বগুড়া সদর থানাধীন নিউ মার্কেটের আল-তৌফিক জুয়েলার্সে গত ২০শে এপ্রিল  আনুমানিক  সকাল ০৯.০০ ঘটিকা হইতে ৯-৩০ ঘটিকার মধ্যে অভিনব কায়দায় দোকানের শাটারের তালার্কেটে অজ্ঞাত চোর/চোরেরা ১১০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে যায় । এর প্রেক্ষিতে আলতৌফিক জুয়েলার্স এর মালিক থানায়  অভিযোগ করেন, এরই প্রেক্ষিতে বগুড়া সদর থানার মামলা রুজ হয়।
বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে বগুড়া জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম পিপিএম (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায়
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মোঃ স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর তত্তাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জনাব মোঃ শরাফত ইসলাম ও জনাব মোঃ সাইহান ওলিউল্লাহ,
পিপিএম, অফিসার ইনচার্জ, সদর থানা, বগুড়ার নেতৃত্বে বগুড়া সদর থানার একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত  ১ মে ২০২৪ ইং তারিখে অভিযান শুরু করে।
৬ দিন ব্যাপি বিভিন্ন জেলায়,  গাজীপুর, চাঁদপুর, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম জেলায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রামের পটিয়া থানা এলাকা হইতে বর্ণিত মামলার তদন্তে প্রাপ্ত অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহাকে ৬ মে ২০২৪ ইং   তারিখে গ্রেফতার করে।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সাথে জড়িত মূল অভিযুক্ত কবেলকে একই দিনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় আকবরশাহ থানার ফিরোজশাহ কলোনী এলাকা হইতে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্ত রুবেলকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়,  সে বর্নিত চুরি ঘটনার বিভিন্ন ধরনের ১৭ (সতের ভরি) স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার কুমিল্লা সদর দক্ষিন থানাধীন সোয়াগাজী বাজারের বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে শাহাজালাল এর কাছে বিক্রি করেছে।
তার প্রদত্ত তথ্যর ভিত্তিতে ০৭/০৫/২৪ খ্রি. কুমিল্লা সোয়াগাজী বাজারে বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে অভিধান করে অভিযুক্ত শাহাজালালকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার ১৭ ভরি ০৮ আনা ০৪ রতি উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নকে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেখানো মতে চুরি সংঘটন কাজে ব্যবহৃত তালা কাঁটার যন্ত্র বোল্ট কাঁটার বগুড়া সদর থানাধীন ছিলিমপুর মৌজাস্থ ঢাকা রংপুর মহা সড়কের পূর্ব পার্শ্বে বগুড়া মৃত্তিকা অফিস সংলগ্ন জঙ্গলের ভিতর হইতে গত ০৮/০৫/২০২৪ খ্রি সন্ধ্যা ৬:৪৫ ঘটিকার সময় উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়ন সাহা জানায় যে, উক্ত চুরিতে তার দায়িত্ব ছিল স্বর্ণের দোকানের তালা কাটার। সে তার দায়িত্ব পালন করে পালিয়ে যাওয়ার সময় উল্লেখিত স্থানে বোল্ড কাটারটি ফেলে যায়।
অভিযুক্ত কবেল ও নয়নকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, রুবেল এর নেতৃত্বে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত ইব্রাহিম ওরফে নয়নসহ ১২ (বার) জন মোট ১৩ জন বর্ণিত চুরির ঘটনায় অংশগ্রহন করে। চুরি করার সময়ে প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে।
কোন সদস্য কাপড় জাতীয় কিছু দিয়ে ঘটনাস্থল আড়াল করে। কোন সদস্য কাঁটার বহন করে। কোন সদস্য দোকানের শাটারের তালা কাটে। ০২ জন সদস্য দোকানের ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল ব্যাগে ভর্তি করে। কোন সদস্য রাস্তায় অবস্থায় করে লোকজনকে অনুসরন করে। চুরি কার্য সম্পন্ন হলে কোন সদসা চুরিকৃত মালামাল বহন করে।
বর্ণিত ঘটনায় তারা চুরিকার্য সম্পন্ন করে সাতমাথা, তিনমাথা হয়ে বগুড়া নাটোর মহাসড়ক ব্যবহার করে সিএনজি এবং বাসে উঠে তাদের দলের প্রধানের নির্দেশনায় নাটোর জেলার মাদ্রাসা মোড়ে পূনরায় একত্রিত হইয়া কুমিল্লা চলে যায়।
তারপর নিজেদের মধ্যে চুরি মালামাল ভাগ করে নেয়। গ্রেফতার এড়াতে অভিযুক্তরা প্রত্যেকে বিভিন্ন এ্যাপস ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। অভিযুক্তরা সকলেই ভাসমান তারা তাদের নিজস্ব ঠিকানায় বসবাস করে না। তারা কোন চুরি ঘটনা সংঘটনের পর তাদের বাসা পরিবর্তন করে। অভিযুক্তরা আন্তঃজেলা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য।
সাধারনত মোবাইল, বিকাশ এবং স্বর্নের দোকন চুরি করে। গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তরা আরো জানায় যে, যেকোন জেলায় চুরি করার পূর্বে তারা উক্ত এলাকায় এসে আগেই চুরির স্থান রেকি করে যায় এবং সাধারণত তারা সরকারী ছুটির দিনে চুরি করে।
এছাড়াও অভিযুক্তদের পিসিপিআর যাচাই করে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ০১ নং আসামী মোঃ রুবেল ওরফে আঙ্গুল কাঁটা রুবেল (২৭) এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ১২ টি, ০২ নং আসামী ইব্রাহিম ওরফে নয়ন (৩০)
এর বিরুদ্ধে ০৬ টি, ০৩ নং আসামী মোঃ শাহাজালাল (৪৬) এর বিরুদ্ধে ০২টি চুরি মামলা রয়েছে। পুলিশ সুপার জানান, এ সংক্রান্তে অন্যান্য পলাতক অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান চলমান আছে।

পুরোনো সংখ্যা

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১