সর্বশেষ :

পিএসজিকে হতবাক করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ডর্টমুন্ড


অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় : মে ৮, ২০২৪ । ২:৪৪ অপরাহ্ণ
পিএসজিকে হতবাক করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ডর্টমুন্ড

ম্যাটস হামেলসের একমাত্র গোলে মঙ্গলবার দ্বিতীয় লেগে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) পরাজিত করে দুই লেগ মিরিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে জার্মান ক্লাব  বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।

পার্ক ডি প্রিন্সেসে দ্বিতীয়ার্ধের পাঁচ মিনিটে হামেলস জয়সূচক গোলটি করেছেন। প্রথম লেগে গত সপ্তাহে জার্মানীর মাঠে ১-০ গোলে পরাজিত হবার পর ঘরের মাঠে ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিল পিএসজি।

কিন্তু স্বাগতিক সমর্থকদের সামনে তাদের হতাশ হতে হয়। পিএসজির চারটি শট বারে লাগলে হতাশা আরো বাড়ে। জার্মান বুন্দেসলিগা টেবিলের পঞ্চম স্থানে থাকা ডর্টমুন্ড কখনই এতদুর যাবার আশা করেনি। ১১ বছর পর আগামী ১ জুন ওয়েম্বলির স্বপ্নের ফাইনালে  খেলতে যাচ্ছে ডর্টমুন্ড।

২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মত ফাইনাল নিশ্চিত করলো জার্মান জায়ান্টরা। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ঐ ফাইনালটিও ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। চির প্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে পরাজিত সেই ফাইনালেও হামেলস খেলেছিলেন। এবারের প্রথম লেগে নিকলাস ফুয়েলক্রুগ একমাত্র গোল করেছিলেন।

ম্যাচ শেষে ডর্টমুন্ড কোচ এডিন টারজিক ব্রডকাস্টার আ্যামাজন প্রাইমকে বলেছেন, ‘পুরো বিষয়টি বুঝতে আমার কিছুটা সময় লেগেছে। কিন্তু এখন আমরা শেষ কাজটুকু সারতে চাই। যেকোন ভাবেই হোক আমরা কাজটা সম্পন্ন করেছি, এখন লন্ডনে খেলতে যাচ্ছি।’

ডর্টমুন্ডের জন্য গল্পটা রূপকথার হলেও পিএসজির জন্য আরো একবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের হতাশা বাড়লো। ২০১১ সালে কাতারি মালিকের কাছে ক্লাবের দায়িত্ব যাবার পর শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সাফল্যের জন্যই সব অর্থ ব্যয় করেছে পিএসজি।

একইসাথে দলের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্যও পিএসজির হয়ে এটাই শেষ সুযোগ ছিল। এবারের মৌসুমে পিএসজির সাথে চুক্তি শেষ হয়ে যাবার পর ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমবাপ্পে। সাত বছরের পিএসজি ক্যারিয়ারে ক্লাবকে সবচেয়ে বড় শিরোপা উপহার দিতে না পারা এমবাপ্পের নিজের জন্যও একটি বড় ব্যর্থতা।

পিএসজির অধিনায়ক মারকুইনহোস ক্যানাল প্লাসকে বলেছেন, ‘আমরা যথেষ্ঠ ভাল খেলতে পারিনি। তারা দুই গোল দিয়েছে, একটি কর্নার থেকে, অন্যটি লম্বা পাস থেকে। বিপরীতে আমরা বেশী সুযোগ তৈরী করেছি,

দেখতে গেলে তাদের থেকে বেশী। কিন্তু ম্যাচটি বের করে আনতে পারিনি। সবসময়ের মতই ফাইনালে খেলতে চেয়েছিলাম, কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলাম। আজ আমাদের জেতা উচিৎ ছিল, আরো বেশী  প্রতিরোধ করা উচিৎ ছিল। কিন্তু তার কিছুই হয়নি।’

করোনা মহামারির সময় দুটি সেমিফাইনালে খেলেছে পিএসজি। ১৯৯৫ সালের পর ২৯ বছরের মধ্যে এই প্রথম ইউরোপীয়ান কোন প্রতিযোগিতার শেষ চারের ম্যাচ তার স্টেডিয়াম ভর্তি স্বাগতিক সমর্থকদের সামনে খেলার সুযোগ,

পেলো স্বাগতিক খেলোয়াড়রা।গ্রুপ পর্বে ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২-০ গোলে জয়ী হয়েছিল লুইস এনরিকের দল। সেই পারফরমেন্সের পুনরাবৃত্তি দলের ফাইনাল খেলার জন্য যথেষ্ঠ ছিল।

পিএসজির কোচ এনরিকে একটি বড় পরিবর্তন করে মূল দল সাজিয়েছিলেন। ব্র্যাডলি বারকোলাকে দলের বাইরে রেখে তার পরিবর্তে পর্তুগীজ স্ট্রাইকার গনসালো রামোসকে সুযোগ দিয়েছিলেন। এ কারনে এমবাপ্পে আক্রমনভাগের সেন্ট্রাল পজিশন থেকে সড়ে লেফট উইংয়ে খেলেছেন।

ফ্রি-কিক থেকে ডর্টমুন্ড এগিয়ে যাবার প্রথম সুযোগটি পেয়েও হাতছাড়া করেছে। প্রথম শটটি নিতে এমবাপ্পে মাত্র সাত মিনিট সময় নিয়েছেন। যদিও তার ভলি সহজেই রুখে দেন ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রেগর কোবেল। স্বাগতিক পিএসজিই বলের বেশীরভাগ নিয়ন্ত্রন নিজেদের কাছে রেখেছিল।

কিন্তু এমবাপ্পে কোনভাবেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিল না। ফরাসি অধিনায়ককে প্রায়ই উইং পজিশনে একা থাকতে দেখা গেছে। প্রথমার্ধে ম্যাচের সবচেয়ে সেরা সুযোগটি পায় ডর্টমুন্ড। কাউন্ডার এ্যাটাক থেকে করিম আদেইয়েমির শট গিয়ানলুইগি ডোনারুমা রুখে দেন।

বিরতির পর পিএসজির অবশ্যই এগিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল। এমবাপ্পের কাছ থেকে রামোসের টাচে বল ওয়ারেন জেইরে-এমেরির কাছে গেলে পোস্টের খুব কাছ থেকে তার শটটি বারে লেগে ফেরত আসে।

এটাই হয়তো পিএসজির জন্য দূর্ভাগ্য বয়ে আনে। মিনিটখানেক পরেই কর্ণার থেকে জুলিয়ান ব্রান্ডেটের বলে মাথা ছুঁইয়ে হামেলস সেই কাঙ্খিত গোলটি উপহার দেন।

রামোসের শট বারের উপর দিয়ে চলে যায়। নুনো মেনডেসের শক্তিশালী শট আবারো বারে লেগে ফেরত আসে। তখনই ধারনা মজবুত হয় এই রাতটি হয়তো পিএসজির জন্য নয়। এই সময়ে এনরিকে রামোস ও ফাবিয়ার রুইজের স্থানে বারকোলা ও মার্কো আসেনসিওকে মাঠে নামান।

এ সময়ে এমবাপ্পে তার স্বাভাবিক জায়গায় ফিরে আসেন। লিড ধরে  রাখার লক্ষ্যে ডর্টমুন্ড একজন অতিরিক্ত ডিফেন্ডার হিসেবে ৬৭ মিনিটে নিকলাস সুয়েলকে মাঠে নামায়। ৮৬ মিনিটে এমবাপ্পের শট রুখে দেন কোবেল। ফিরতি বলে ভিটিনহা আবারো পোস্টে লাগালে ডর্টমুন্ডের লন্ডনের টিকেট নিশ্চিত হয়।

 

সুত্রঃ বাসস

পুরোনো সংখ্যা

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১