সর্বশেষ :

নেশার নাম ড্যান্ডি, আসক্ত শিশু-কিশোর


ফারুক আহমেদ ,লালমনিরহাট :
প্রকাশের সময় : মে ৪, ২০২৪ । ১:২১ অপরাহ্ণ
নেশার নাম ড্যান্ডি, আসক্ত শিশু-কিশোর
ড্যান্ডি হল এক প্রকার গ্লু গাম বা আঠা জাতীয় পদার্থ যা সাধারণ তাপমাত্রায় সহজেই বাষ্পে বা ধোঁয়ায় পরিণত হয়। সাধারণত চার প্রকার জৈব যৌগ যথা- টলুইন, বেনজিন, অ্যাসিটোন ও কার্বন ট্রাই ক্লোরাইড এই গাম জাতীয় পদার্থে বিদ্যমান থাকে। বিভিন্ন প্রকার রাবার ও চামড়া জাতীয় পদার্থ যেমন- জুতা,
চাকার রাবার-টিউব প্রভৃতির মেরামতকাজে গাম হিসেবে এর বহুল ব্যবহার হয়। এই প্রকার উদ্বায়ী গাম জাতীয় পদার্থ বাষ্প বা ধোঁয়ার ঘ্রাণ শ্বাস গ্রহণের মাধ্যমে শ্বাসতন্ত্র হয়ে রক্তের মাধ্যমে মানব মস্তিষ্কে প্রবেশ করে, প্রথমে জাগায় আনন্দের শিহরণ আর অনিয়ন্ত্রিত উন্মাদনা, পরবর্তীতে যা দেহে আনে এক শিথিলতার ভাব।
ফলে দীর্ঘমেয়াদে এই পদার্থের অপব্যবহারের ফলে এর প্রতি সৃষ্টি হয়  শিশু কিশোরদের এক চরম আসক্তি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যা ‘গ্লু স্ফিলিং’ বা বাংলায় ‘গ্লু গাম শুকা’ নামে পরিচিত। আর সাধারণ মানুষ ও নেশাগ্রস্তদের নিকট তা ড্যান্ডি নামে পরিচিত।
বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় একটু ভালো করে তাকালে কিছু শিশু-কিশোরকে দেখা যায় ফোলানো পলিথিনে নাক-মুখ ঢুকিয়ে শ্বাস নিচ্ছে। মূলত এভাবেই তারা নেশা করে। এ নেশা এখন চরম আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এর বড় শিকার হচ্ছে  শিশু-কিশোরেরা।  তারা এই ড্যান্ডি সেবন করে।
এই নেশার প্রকোপতা সম্পর্কে আমাদের দেশে এখনও সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই, তবে দুই দশক ধরে এ নেশায় আসক্তদের সংখ্যা দেশে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সাধারণত বড় বড় শহরের বা সমাজের সুবিধা বঞ্চিত কিশোর-কিশোরী ও সদ্য বয়োপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যেমন- রাস্তার টোকাই, ভবঘুরে, কুলি-মজুর শ্রেণির মধ্যে এই প্রকার নেশার প্রকোপ বাড়ছে।
সাধারণত সহজলভ্য হওয়া ও আইনত নিষিদ্ধ পদার্থ হিসেবে চিহ্নিত না হওয়ায় এই নেশার প্রকোপ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই নেশার জাল আজ বিস্তৃত হয়েছে সমাজের নিম্নশ্রেণি থেকে মধ্যবিত্ত পর্যন্ত। হার্ডওয়ারের দোকানসমূহে এই প্রকার নেশা তথা গ্লু গাম সহজলভ্য।
এই নেশার প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ সমাজের সুবিধা বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কিশোর-কিশোরী ও সদ্য বয়োপ্রাপ্ত শ্রেণী। এই নেশায় আসক্তরা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে নানা মনো-আচরণগত, শারীরিক ও সামাজিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়। এছাড়া মানব শরীরের শ্বাসতন্ত্র, পরিপাক, স্নায়ু ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের ওপর এই প্রকার নেশার ক্ষতিকারক উপাদানগুলো বিরূপ প্রভাব ফেলে।
এই নেশার টাকা জোগাড়ে এ শিশু-কিশোরেরা চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে একসময় দাগী আসামিতে পরিণত হয়। কাজেই এখনই যদি কিছু করা না হয় তাহলে ভবিষ্যতে আরও খারাপ পরিস্থিতি অপেক্ষা করবে তাতে সন্দেহ নেই।

পুরোনো সংখ্যা

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১