যমুনার চরে ক্যাপসিকাম চাষ, বিক্রি নিয়ে বিপাকে কৃষক

যমুনার চরে ক্যাপসিকাম চাষ, বিক্রি নিয়ে বিপাকে কৃষক
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশের সময় :

জামালপুর: জামালপুরে ইসলামপুরে যমুনার চরাঞ্চলে প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন প্রবাস ফেরত মো. আবু সাইদ। তবে বিক্রি করতে না পারায় ক্যাপসিকাম খেতেই পচে যাওয়ায় হতাশায় দিন কাটছে এই কৃষকের।

ছয় বছরের প্রবাস জীবন শেষে ইউটিউব দেখে ক্যাপসিকাম চাষ শিখেন আবু সাইদ। পরে নিজ জন্মভূমি সাপধরী ইউনিয়নের চেঙ্গানিয়া গ্রামে ফিরে ঋণ করে ছেলে হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে করেন এই ক্যাপসিকাম চাষ। তবে বিক্রি করতে না পারায় ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে তাদের স্বপ্নের ফসল ক্যাপসিকাম। এদিকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের চেঙ্গানিয়া গ্রামের গিয়ে দেখা গেছে, যমুনার বিস্তীর্ণ চরের মাঝখানে ৪০ শতাংশ জমিতে দেখা যাচ্ছে ক্যাপসিকাম। প্রতিটি গাছের আগায় ঝুলে আছে সবুজ ও লাল রঙের ক্যাপসিকাম। ফলন ভালো হওয়ায় যেখানে কৃষকের মুখে হাসি থাকার কথা সেখানে ফসলটি বিক্রি করতে না পেরে কাঁদছে কৃষক।

জেলা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে যমুনা নদীর চরে করা হয়েছে ক্যাপসিকাম চাষ। এই জমিতে ৮০ হাজার টাকা খরচ হলেও এখন পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার ক্যাপসিকাম বিক্রি হয়নি এই ক্ষেত থেকে।

কৃষক আবু সাইদ জানান, তিনি মালয়েশিয়ায় বসে ইউটিউবে ভিডিও দেখে ক্যাপসিকামের বাগান করতে উদ্বুদ্ধ হন। পরে যমুনার জেগে উঠা চরে নানা জাতের ফসল চাষ করা হতো। সেই ৪০ শতাংশ জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করার উদ্যোগ নেন তিনি। পরে বগুড়া থেকে কিছু উন্নত জাতের ক্যাপসিকামের বীজ এনে ওই জমিতে শুরু করেন চাষাবাদ। এতে তার ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়।

আবু সাইদের ছেলে হৃদয় মিয়া জানান, বাবার সঙ্গে জমিতে সব সময় কাজ করেন তিনি। পরিপক্ব হওয়ার পর প্রতিটি ক্যাপসিকামের ওজন ২৫০ গ্রাম হয়। যা বাজারে বিক্রি করে পরিবারের অভাব-অনটন ঘুচবে বলে আশাবাদী তিনি।

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্যাপসিকাম সবজিটি খাওয়ায় অভ্যস্ত না থাকায় ক্যাপসিকাম স্থানীয় কোনো হাটবাজারে বিক্রি করতে পারছেন না। অনেকটা বাধ্য হয়েই বিক্রি করতে হচ্ছে ঢাকার কাওয়ান বাজারে নিয়ে। এতে সময় ও অর্থ দুটিই অপচয় হচ্ছে তাদের।

স্থানীয়রা এই ফসলটিকে ফল হিসেবেই চেনে। জেলা ও রাজধানী পর্যায়ে সবজির চাহিদা থাকলেও যমুনার চরে নেই বিক্রির ব্যবস্থা। তবে বাবা-ছেলের এই সফলতা ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে ক্যাপসিকাম চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে জানান স্থানীয় ‍কৃষকরা। তাই একটি ভালো বাজার ব্যবস্থার দাবি তাদের।

ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এল এম রেজুয়ান বলেন, ক্যাপসিকাম উচ্চমূল্যের একটি নতুন ফসল। এ উপজেলায় প্রথমবার বাণিজ্যিকভাবে এ ফসল চাষ করে সাফল্য লাভ করেছেন তারা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

 

সুত্রঃ বাংলানিউজ২৪