মুসলিম উম্মাহর কাছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অমিয় বার্তা নিয়ে আবার শুভাগমন করলো পবিত্র মাহে রমজান। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে।
আজ বাদ এশা দেশের মসজিদে মসজিদে তারাবির নামাজ শুরু হবে এবং দিবাগত ভোর রাতে সেহরি খেয়ে রোজা রাখা শুরু করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। কাল হবে প্রথম রোজা। এই হিসেবে আগামী ৬ এপ্রিল (২৬ রমজান) শনিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বাসসকে জানান, আজ সোমবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
দীর্ঘ এগার মাসের পাপ পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার অপূর্ব সুযোগ এনে দেয় এই রমজান। পবিত্র রমজানের আগমনে মুসলিম সমাজ ও ইসলামী জীবন ধারায় এক বিরাট সাফল্যের সৃষ্টি হয়। রমজান মাস হলো ইবাদতের বসন্তকাল। আল্লাহপাক ইবাদতপাগল বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য সব আয়োজন করে রাখেন।
এ মাসে একটি ফরজ আমলের মূল্য অন্য সময় ৭০টি ফরজ আমলের সমপরিমাণ। পবিত্র রমজান মাসে সারা দেশের সকল মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণ করে খতমে তারাবীহ্ পড়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সকল মসজিদে খতমে তারাবীহ্ নামাজে প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ৯ পারা ও পরবর্তী ২১ দিনে এক পারা করে তিলাওয়াতের মাধ্যমে পবিত্র শবে কদরে কুরআন খতমের জন্য সারা দেশের সকল মসজিদের খতিব, ইমাম, মসজিদ কমিটি, মুসল্লি এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।
রমজানে দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে এবং কেউ যাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে এ জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করবে।
এ ছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডিসি ও ইউএনওদের সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে চালের কোন অভাব নেই। চালের কৃত্রিম সংকট তৈরী করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ পরিবহনে দুধ, ডিম, মাছ ও মাংস বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রথম রোজা থেকে শুরু হয়ে ২৮ রমজান পর্যন্ত ঢাকার ৩০টি কেন্দ্রে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
রোববার রাজধানীর খামারবাড়ীতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
বিক্রয় কেন্দ্রগুলো হলো – নতুনবাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ী (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেল ক্রসিংয়ের দক্ষিণে),
সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গনি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচা বাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালসী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), বসিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (শিকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), আরামবাগ (মতিঝিল), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর-১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) কাকরাইল।
স্থায়ী বাজার- মিরপুর শাহ আলি বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর, কাজি আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।
নির্ধারিত এসব পয়েন্টে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকা, খাসি ৯০০ টাকা, ব্রয়লার ২৫০ টাকা, ১ লিটার দুধ ৮০ টাকায় পাওয়া যাবে। এছাড়া এক ডজন ডিম পাওয়া যাবে ১১০ টাকায়। এছাড়া রুই, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছও পাওয়া যাবে।
এছাড়া দুই সিটির ৫ জায়গায় অস্থায়ী দোকানে ৬৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস ও ৮ জায়গায় সুলভ মূল্যে মাছ বিক্রি হবে। গরু, খাসি, মুরগির মাংস এক কেজি করে কিনতে পারবেন ক্রেতারা। প্রতিটি বিক্রয় কেন্দ্রে সকাল ৯টার মধ্যে প্রাণিজাত পণ্য নিয়ে কুলভ্যানগুলো পৌঁছে যাবে এবং সকাল ১০টা থেকে বিক্রয় করা হবে।
সূত্র : বাসস
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :