কেটে-ছিড়ে গেলে বা আঘাত লাগলে রক্ত জমাট বাঁধাটাই শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। রক্তপাত বন্ধ করতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রক্তের প্লাটিলেট, প্রোটিন এবং কোষগুলো একসঙ্গে অনেকটা জেল-এর মতো ঘন হয়ে রক্তপাত বন্ধ হয়। এটি খুবই স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।
কিন্তু এই জমাট বাঁধা রক্তই নিজে থেকে ফের রক্তে দ্রবীভূত না হলে তখনই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। একে বলে ‘থ্রম্বাস’। ধমনীতে জমাট বাঁধা রক্ত ‘আর্টিয়াল ক্লট’ হিসাবে পরিচিত। এর ফলাফল গুরুতর হতে পারে।
কোভিড-১৯-এর গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো এই রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া। এর ফলে ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়তে পারে। বৃদ্ধি পেতে পারে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও।
কোভিড-১৯-এর পরে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের উপর এক সমীক্ষা অনুযায়ী, যারা ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের প্রায় এক বছর পরেও বিপজ্জনকভাবে রক্তজমাট বাঁধার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে।
অন্যান্য কিছু গবেষণাতেও দেখা গেছে যে, কোভিডে রক্ত জমাট বাঁধা সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো বিষয়ের সম্ভাবনা কোভিড হয়নি- এমন রোগীদের তুলনায় বেশি থাকে।
ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধলে সেটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। এটি হৃদপিণ্ড বা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে দিতে পারে। রক্তের জমাট হার্টের পেশীর ধমনীর পথ অবরুদ্ধ করে দিতে পারে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। অন্যদিকে মস্তিষ্কের ধমনীতে বাধা এলে তার থেকে স্ট্রোক হতে পারে।
রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ
ত্বকের রঙ বদল: হাত বা পায়ে শিরায় হঠাৎ কালসিটের মতো বা লালচে দাগ দেখলেই সাবধান হতে হবে। রক্তনালীর ক্ষতির কারণে আপনার ত্বক বিবর্ণও হয়ে যেতে পারে। তাই হাত বা পায়ে বিনা কারণে কালসিটের মতো দাগ দেখলে অবহেলা করবেন না।
ফোলা ভাব: কালসিটের মতোই, হাত, পা, পেটে হালকা গুটি মতো হলে সাবধান হোন।
যন্ত্রণা: হঠাৎ বুকে তীব্র ব্যথা হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যান। অথবা বিনা কারণে হঠাৎ হাতে, বিশেষত বাম হাতে ব্যথা হলে একেবারেই সময় নষ্ট করবেন না।
শ্বাসকষ্ট: এটি অত্যন্ত গুরুতর উপসর্গ। বিনা কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তা আপনার ফুসফুসে বা হার্টে রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ হতে পারে। হঠাৎ খুব শ্বাসকষ্ট, টেনশন, ঘাম, বুক ধড়ফড় ভাব হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নইলে বিপদ বাড়তে পারে।
সূত্র : ঢা/টা
ভিসি/এসকে
আপনার মতামত লিখুন :