সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় হলুদের আবরণে দিগন্ত জোড়া সরিষা ক্ষেত। মাঠে শোভা পাচ্ছে হলুদের সমারোহ। দেখলেই মন ও চোখ জুড়িয়ে আসে। চাষিরা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পারকরছেন।
অন্যান্য ফসলের সে রকম দাম না পাওয়ায় এবার সরিষা চাষে ঝুঁকেছেন তাড়াশের কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় , আমন ছাড়াও জমি থেকে সরিষা ওঠার পর ঐ জমিতে বোরো ধান আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং বোরো ধানের খুব ভাল ফলন হয়।
এ বছর অধিক (উচ্চ) ফলনশীল আগাম জাতের সরিষার চাষ করছেন এ এলাকার চাষিরা। বারি-১৪, ১৭, ১৮,বিনা-৯ জাত চাষে কৃষক মাত্র ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। প্রতি বিঘাতে ফলন পাওয়া যায় ৮ থেকে ১০ মণ।এ ছাড়াও স্থানীয় জাত টরি-৭ জাতের আবাদ করছেন কৃষক। এ জাতের সরিষা উৎপাদনের সময় লাগে বেশি।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, চলতি বছরে তাড়াশ উপজেলায় ১১হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অর্জিত জমির পরিমাণ হলো ১০ হাজার ১১৫ হেক্টর।
এর মধ্যে বারি-১৪ জাতের সরিষা ৫ হাজার ৪৮০ হেক্টর, বারি-১৭, ২ হাজার ২২০হেক্টর, বারি-১৮, ২২ হেক্টর, বিনা-৯, ২৩৩ হেক্টর টরি-৭ জাতের ২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে রোপন করা হয়েছে।
উপজেলার মাগুড়াবিনদ ইউনিয়নের মাগুড়াবিনদ গ্রামের কৃষক আবুবক্কার, দেবিপুর গ্রামের কৃষক সাগর , ঘরগ্রাম গ্রামের কৃষক হাবিল সহ আরও কয়েক জন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক বিঘা জমিতে সরিষা আবাদে (হাল, বীজ, সার) খরচ হয় ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। এক বিঘা জমিতে সাত থেকে আট মণ সরিষা পাওয়া যায়। প্রতি মণ সরিষা ২৮০০- ৩২০০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। এতে কৃষকের অন্য ফসলের চাইতে বেশি লাভ হয়। আর বিঘায় খরচ বাদে লাভের পাশাপাশি নিজেদের তেলের চাহিদাও পূরণ হয়।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিল। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে। অল্প সময়ের মধ্যে অধিক ফলন পেতে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি, ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দাম পেলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
ভিসি/এমকে
আপনার মতামত লিখুন :