সম্পত্তির লোভে তুচ্ছাতিতুচ্ছ ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সৃষ্টি হয় পরস্পরের প্রতি হিংসা-দ্বেষ-ক্ষোভ, এক পর্যায়ে তা রূপ নিয়েছে হিংস্রতায়। ঘাতক ভাসুর ও তার স্ত্রী স্বপ্না উভয় মিলে পুড়িয়ে হত্যা করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রোকসানাকে।
পুলিশ বলেছেন, ভাসুর মোস্তফা ও তার স্ত্রী স্বপ্নাকে গ্রেফতারের পর উন্মোচন হয়েছে হত্যারহস্য। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ঘাতক মোস্তফা ও স্বপ্না। উভয় পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। যেভাবে হত্যা করা হয় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রোকসানাকে।
সীতাকুন্ড মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তোফায়েল আহমেদ জানান, গৃহবধূ রোকসানা এবং ভাসুর মোস্তফা ও স্বপ্নার সাথে সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন বিরোধ চলিয়া আসতে ছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে ঘটনার ৫ দিন আগে বাড়ীর উঠান থেকে পানি নিস্কাশন এর জন্য মোস্তফা একটি ড্রেন করেছিল। কিন্তু রোকসানা ড্রেনটি বন্ধ করে দেয়।উক্ত বিষয় নিয়ে ঝগাড়া বিবাদ হয়।
এরপর পরিকল্পনা শুরু হয় মোস্তফা ও স্বপ্না দুইজনেই রোকসানা ও তার স্বামীকে মেরে ফেলবে। প্রথমে তারা সিদ্ধান্ত নেয় রোকসানাকে মারবে তারপর সুযোগ বুঝে তার স্বামীকে মারবে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন আসামী দুইজন পরিকল্পনা করে তার স্বামী বাড়ীতে নেই তখন ঘরের ভিতর মেরে ফেলবে এবং ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করবে। এই আলোকে আসামী মোস্তফা বাঁশবাড়িয়া বাজারস্থ ছুট্টু সওদাগরের দোকান থেকে কেরসিন তৈল এবং স্বপন ফার্মেসী থেকে হ্যান্ডগ্লফস কিনে বাড়ীতে আসে। দুপুর ১২.৩০ মিনিটে মোস্তফা নিজ ঘরের মধ্যেই হ্যান্ডগ্লফস পরিধান করে এক হাতে একটি গাছের সাইজ কাঠ নেয় তার স্ত্রী কেরসিন তৈলের বোতল নেয় তখন বৃষ্টি হচ্ছিল, রুকসানার ঘরের দরজা হালকা খোলা দেখে ভিতরে প্রবেশ করে, খাটের উপরে বসা অবস্থায় দেখে মাথার পিছনে কাঠ দিয়ে বারি মারে তখন রোকসানা খাটের উপরে পড়ে যায়। তার পর লেপ কাথা মুড়িয়ে দিয়ে মোস্তফা ও স্বপ্না নিজের ঘরে চলে যায়। এই ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হোসনেয়ারা সব দেখে ফেলায় তাকে তার বোবা মেয়েসহ মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং হোসনেয়ারাকে তার ঘরের ভিতর রেখে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।খুনিরা আবারও কিছুক্ষণ পর রোকসানার ঘরে প্রবেশ করে কেরসিন তৈল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে আসে।
হত্যার দায় থেকে নিজেদের বাঁচাতে কৌশল অবলম্বন করেন, মানুষ দুপুর বেলা ভাত রান্না করে গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ হয়ে মৃত্যু হয়েছে মর্মে চালিযে দিবে। কিন্ত প্রত্যক্ষ্ সাক্ষীসহ ধৃত আসামীদ্বয় সীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মৃত রোকসানার পিতা বাদী হয়ে আসামী গোলাম মোস্তফা ও স্বপ্নার বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন সীতাকুন্ড মডেল থানায়।
আপনার মতামত লিখুন :