এসএসসি পরীক্ষা গ্রহণ শেষে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে অনৈতিকভাবে এসএসসির উত্তরপত্র এবং ওএমআর শিট পূরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। বিষয়টি জানাজানির পর গোয়ানঘাটের সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ তানভীর হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান।এ কমিটি তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
শিক্ষক কর্তৃক পরীক্ষার উত্তরপত্র পুরণের ভিডিও দৃশ্যগুলো গত বৃহস্পতিবার ও রোববার পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের।বিদ্যালয়টি উপজেলার অন্যতম একটি পরীক্ষা কেন্দ্র, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয় পার্শ্ববর্তী হাজী সোহরাব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। পরীক্ষা শেষে তাদের খাতা মূল কেন্দ্র তথা আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের দুইজন খণ্ডকালীন শিক্ষক উত্তরপত্র পূরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হাতে আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, পরীক্ষা শেষে আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কিছু শিক্ষার্থী অবস্থান করছে এবং বিদ্যালয়ের অফিসে একাধিক শিক্ষার্থীকেও ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।এসময় এক ছাত্রকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে বাবু স্যারের সঙ্গে দেখা করতে বলেন এক শিক্ষক।
২৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দুইজন শিক্ষক বৃত্তভরাট করছেন। ২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ছাত্রীকে তার বিভাগ জিজ্ঞাসা করছেন এক শিক্ষক। আরেক ছাত্রকে কেউ একজন ধমক দিচ্ছেন। ওএমআর শিট ঠিক করে রাখতে দেখা গেছে একজনকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক কেন্দ্রের খাতা ঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়া হলেও আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের খাতা দেরিতে পোস্ট অফিসে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ থেকে সন্দেহ হওয়ার পর গোপন সূত্র কেন্দ্রে অবস্থান নিয়ে ভিডিও ধারণ করেন।পরে ওইসব ভিডিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্নজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। রোববার রাতে ভিডিও প্রকাশ পেলে তোলপাড় শুরু হয়।
এ বিষয়ে জাফলং আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এখন এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, ভিডিও ক্লিপ পাওয়ার পর রোববার রাতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। পরে তাৎক্ষণিকভাবে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে আহ্বায়ক এবং উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করে গঠিত ওই কমিটি তিনদিনের মধ্যে এই বিষয়ে প্রতিবেদন দিবেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন পাওয়ার পর এবিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :