নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
মহামারি করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে নাজেহাল ভারতে বেড়েই চলছে দৈনিক সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১ লাখ ১৫ হাজার লোকের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা এক দিনের হিসাবে দেশটিতে সর্বোচ্চ। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ৬৩০ জনের। দেশটিতে ব্যাপক হারে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আগামী ৪ সপ্তাহে এটি ‘ভয়াবহ আকার’ ধারণ করতে পারে বলে পূর্বাভাসও দিয়েছে কেন্দ্র।
মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী দিল্লিতে নতুন করে ৫ হাজার ১০০ জন শনাক্ত হয়েছে, যা একদিনের হিসাবে সর্বোচ্চ। চলমান করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে জারি করা রাত্রিকালীন কারফিউ আরোপের মধ্যে নতুন করে এ পরিমাণ শনাক্ত হলো। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সেখানে এই কারফিউ কার্যকর থাকবে বলে জানা যায়।
গত বছরের তুলনায় ভারতে দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়ছে সতর্ক করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলেন, সংক্রমণের পরিসংখ্যান দেখে মনে হচ্ছে লোকজন স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে শিথিলতা দেখাচ্ছে। মাস্ক পরছে না, স্যানিটাইজার ব্যবহার করছে না।
নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ডা. ভি কে পল বলেন, ‘দেশে মহামারি পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে। সংক্রমণ আরও বাড়ছে। জনসংখ্যার বড় অংশ এখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ প্রথম দফার তুলনায় এবার সংক্রমণের গতি আরও বেশি বলে জানিয়েছেন তিনি।
‘দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ জরুরি। আগামী চার সপ্তাহ পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হতে চলেছে। সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সচেষ্ট হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহামারির তীব্রতা বাড়ছে। দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। মোটের ওপর দেশজুড়েই এই পরিস্থিতি।’
মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি রাজ্যে রাজ্যে করোনা চিকিৎসা অবকাঠামো আরও উন্নত করা এবং টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার কথাও জানান তিনি।
তবে ব্যাপক সংক্রমণের পরেও ভারতে মৃত্যুর হার অন্য দেশগুলোর তুলনায় কম বলে জানান তিনি। সব মিলিয়ে মুম্বাইসহ মহারাষ্ট্রের ১০ জেলা, দিল্লি এবং কর্ণাটকের একটি জেলার করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক বলে মনে করছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে সব বয়সী মানুষের টিকাদানের ব্যাপারে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। সম্প্রতি ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকাদানের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে তারা। বর্তমানে ভারতে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে কেবল এই ভ্যাকসিন গ্রহণের অনুমতি রয়েছে।
সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ
আপনার মতামত লিখুন :