আকাশ মার্মা মংসিং, বান্দরবানঃ
বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে আগুনে ম্রো সম্প্রদায়ের ৫০০ একর ফল বাগান পুড়ে গেছে। পুড়েছে দুই হাজার একরের বেশি বনও। মঙ্গলবার ১১টার দিকে কোয়াইং ঝিরি এলাকায় প্রথম আগুন লাগে। এরপর তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে । দুর্গম এলাকার এই আগুন জ্বলতে জ্বলতে এক পর্যায়ে বুধবার সকাল ৯টার দিকে নিভে যায়। ম্রো সম্প্রদায়ের দাবি, আগুনে তাদের প্রায় ৫০০ একর জমির আম, বরই, ড্রাগন, কমলা ও পেঁপে বাগান পুড়ে গেছে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো বাইট্টা পাড়া, রানলাই পাড়া, দেওয়াই হেডম্যান পাড়া, সিংচং পাড়া, মধ্যম পাড়া ও রামরি পাড়া।
ম্রোদের অভিযোগ, পাথরের জন্য জঙ্গল পরিষ্কার করতে জয়নাল নামে একজনের শ্রমিকরা এ আগুন ধরিয়ে দেন। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। নেভানোর কোনো উপায় ছিল না। রামরি পাড়ার গ্রাম প্রধান মেনরুম ম্রো জানান, আগুনে তাদের পাড়ায় ঝিরি থেকে খাবার পানি আনার প্রায় ৬ হাজার ফুট (জিএসএফ) পাইপ পুড়ে গেছে। এতে এলাকায় খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রামরি পাড়ার থংপং ম্রো, তংরুই ম্রো ও মেনসাই ম্রো জানান, দীর্ঘদিন ধরে জয়নাল নামে একজন কোয়াইং ঝিরি ও উত্তর হাঙ্গর ঝিরি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছিলেন। ঝিরির পাথর তুলতে নিষেধ করা হলে ভয়-ভীতি দেখাতেন তিনি। তারা আরও অভিযোগ করেন, সম্প্রতি কোয়াইং ঝিরির পাথর শেষ হয়ে যায়। এরপর পাহাড়ে থাকা পাথর তোলা ও ভাঙা শুরু করেন জয়নালের শ্রমিকরা। এজন্য কিছুদিন ধরে জঙ্গল পরিষ্কার করছিলেন তারা। এর অংশ হিসেবেই জয়নালের শ্রমিকরাই আগুন ধরিয়ে দেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জয়নাল বলেন, ‘ভাই আমার বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারেন। নিউজটা একটু হালকা করে দেন।’ পরে তিনি বলেন, ‘ভাই আমি পাহাড়ে বেড়ে উঠেছি। আল্লাহর কসম, ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’ বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য ক্যসাপ্রু জানান, তিনি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন। তার সঙ্গে আমতলী ক্যাম্পের সেনাসদস্যদের পাশাপাশি গ্রাম প্রধানরাও ছিলেন। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানান, আগুনে ঝিরি থেকে পানি সংগ্রহের পাইপ পুড়ে গেছে। এ কারণে এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। সংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :