জামান মৃধা, ডিমলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারী জেলাধীন ডোমার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জয়ব্রত পাল ও ডিমলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম এবং ওসি (তদন্ত) ডিমলা, মোঃ সোহেল রানার সমন্বয়ে তাদের প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায়, আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও মূল আসামিকে গ্রেফতার করেছে নীলফামারীর ডিমলা থানা পুলিশ। একই সময়ে হত্যার শিকার অজ্ঞাত নারীর পরিচয়ও শনাক্ত করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিমলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার রায় জানান, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত ৩/৩/২১ইং বুধবার ডিমলা উপজেলা বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা গ্রামে সরকারি ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন ভুট্টা ক্ষেতের নির্জন ফাঁকা জায়গা থেকে ২৮ বছর বয়সী নারীর মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তির ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে প্রথমে মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয় ও তার স্বামী তাইবুল ইসলামকে ডোমার থানা পুলিশের সহায়তায় ডোমার আমবাড়ি ইউনিয়নের বাড়ী থেকে সন্দেহমূলক আটক করা হয়।
এসআই প্রদীপ জানান, নিহতের নাম লাভলী বেগম (২৮)। তিনি পার্শ্ববর্তী ডোমার উপজেলার আমবাড়ী ইউনিয়নের রশীদুল ইসলামের মেয়ে। এই নারীর সঙ্গে প্রতিবেশী গোলাম মোস্তফা (৩৫) বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের জেরে লাভলী বিয়ের জন্য চাপ দেয় গোলাম মোস্তফা কে। প্রথমে শিকার করলেও পরবর্তীতে ছলনার আশ্রয় নেয় গোলাম মোস্তফা।
এসআই প্রদীপ কুমার রায় আরো বলেন, গত ইং ২৮/০২/২০২১ইং তারিখ রবিবার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গোলাম মোস্তফা (৩৫) লাভলী বেগমকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে এই কথা বলে মোবাইলে ডেকে নেয়। এরপর তাকে নিজ সুন্দর খাতা ফরেস্টের নির্জন এলাকার ভুট্টা ক্ষেতের একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ গল্প করার পর রাত অনুমানিক ৯.০০/ ৯.৩০ মিনিটে আসামি গোলাম মোস্তফা (৩৫) তার ডান হাত দিয়ে সজোঁরে লাভলী বেগমের গলা টিপে ধরে এবং বাম হাত দিয়ে লাভলি বেগমের নাক মুখ চেপে ধরে। এভাবে ৮/১০ মিনিট চেপে ধরে রেখে লাভলীর মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর লাভলীর ওড়না দিয়ে (লাভলীর) মুখ বেঁধে ফেলে ফরেস্টের নির্জন স্থানে ভুট্টা ক্ষেতে মৃত লাভলী বেগম কে ফেলে রেখে চলে যায়।
এসআই প্রদীপ আরো বলেন, আমরা তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে কললিস্ট ধরে আসামি গোলাম মোস্তফা কে ৭ই মার্চ (সোমবার) সন্ধ্যার দিকে ডোমার থানার আমবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার (৮ই মার্চ) দুপুরে আসামি গোলাম মোস্তফা কে নীলফামারীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আমলি আদালতে সোপর্দ করলে আসামি বিজ্ঞ বিচারক মেহেদী হাসানের নিকট হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালত উক্ত আসামির জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩রা মার্চ বুধবার লাশ উদ্ধারের পর নিহত লাভলী বেগমের বাবা রশীদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। এ মামলায় আটকদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :