বাদল আহাম্মদ খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। প্রকৃতিকে যেন সাজিয়েছে শিমুলে ফুলের শোভায় এক নতুন রূপে। বাতাসে দোল খাচ্ছে শিমুল ফুলের রক্তিম আভায়। গাছের ডালে ফুটে থাকা শিমুল ফুলে মানুষের মনকে যেন রাঙিয়ে তুলেছে।
শিমুল গাছে বসন্তের শুরুতেই ফুল ফোটে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে গিয়ে বাতাসে আপনা আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই এর জন্ম হয়। প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠছে। তাছাড়া বালিশ, লেপ ও তোষক তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। শিমুল গাছ কেবল সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবে ও বেশ গুরুত্ব বহন করছে। প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন হচ্ছে শিমুল গাছ। এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা এখনো নানা রোগের চিকিৎসায় এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে। শিমুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম বোমবাক্স সাইবা লিন। বীজ ও কাণ্ডের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার হয়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে শিমুল ফুল। পাশাপাশি বসন্তের সঙ্গে সঙ্গেই প্রকৃতি যেন নিজ রূপে সেজে উঠেছে । রাস্তার দু’পাশে, পুকুরপাড়ে শিমুল গাছে ফুল বাতাশে দোলা খাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। পথচারিসহ দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে শিমুল ফুল । তাছাড়া গাছে গাছে আসতে শুরু করেছে নতুন পাতা, স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিময় বাতাস জানান দিচ্ছে নতুন লগ্নের। ফাল্গুনের আগমনে পলাশ, শিমুল গাছে লেগেছে আগুনে খেলা। লাল ফুলের কারণে পুরো এলাকায় হয়ে উঠেছে রক্তিম আভা।
পৌর শহরের কলেজ পাড়া এলাকা থেকে ঘুরতে আসা মো. মহসিন মিয়া বলেন, শিমুল ফুলের সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ করবে যে কাউকে। সময় সুযোগ হয়ে উঠে না ঘুরতে। অনেক দিন ধরে শিমুল ফুল দেখতে পরিকল্পনা ছিল। তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে।
মিথিলা ও শিলা বলেন, অনেক দিন পর ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসা। তাই দুজন বিকালে ঘুরতে বের হয়েছেন। বাড়ি সংলগ্ন পুকুর পাড়ে সারি সারি রক্ত রাঙা শিমুল ফুল দেখে সত্যিই অভিভূত।
উপজেলার মোগড়া এলাকার মো. বারিক মিয়া জানায়, তার বাড়ি সংলগ্ন পুকুরপাড়ে ২ টা শিমুল গাছ রয়েছে। এবার তিনি ২টি গাছ থেকে ৫ হাজার টাকার তুলা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
ইটনার মিলন মিয়া বলেন তার ২টি গাছে ভালো শিমুল ফুল এসেছে। আসা যাওয়ার পথে মানুষের নজর কাড়ছে। তিনি আশা করছেন এবার ২-৩ হাজার টাকার তুলা বিক্রি হবে।
আপনার মতামত লিখুন :